post

ইসলামফোবিয়া পাশ্চাত্যবাদীদের অন্যতম রোগ । মোহাম্মদ সাঈদী আলম

০৩ আগস্ট ২০১৯

ইসলামফোবিয়া পাশ্চাত্যবাদীদের অন্যতম রোগ । মোহাম্মদ সাঈদী আলমIslamophobia বর্তমানে একটি আলোচিত প্রচলিত শব্দ। ঢ়যড়নরধ শব্দের অর্থ ভয়, আতঙ্ক, ঘৃণা ইত্যাদি বুঝানো হয়। ইসলামফোবিয়া বলতে ইসলামাতঙ্ককে বুঝায়। উইকিপিডিয়ার সংজ্ঞা মতে, ফোবিয়া বা অস্বাভাবিক ভীতিকে বর্ণনা করা হয় একটিভেট স্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী ভয় হিসেবে যা কোনো বস্তু অথবা স্থান হতে পারে। যার ফলে ভুক্তভোগী বহুক্ষণ ধরে বাস্তবে রূপ নেবে ধারণা করে এর থেকে দূরে থাকে বা মানসিক চাপে থাকে এবং চিন্তার কথা কোনো কোনো সময় তা মারাত্মকও হয়। ভয় মনের অবচেতন স্তরের একটি বিশেষ মানসিক অবস্থা, যার নির্দিষ্টতা আছে কিন্তু ভয় যখন নির্দিষ্ট অতিক্রম করে একে ভয়রোগ/ ভীতিরোগ/ ফোবিয়া বলে। অনেক ধরনের ফোবিয়া আছে তন্মধ্যে ইসলামফোবিয়া, যা বিভিন্ন দেশে স্নায়ুব্যাধি আকার ধারণ করেছে।

ইসলাম অর্থ শান্তি এই শান্তির বাণী যুগে যুগে নবী আম্বিয়াগণ মানুষের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। দেখিয়েছে তার প্র্যাকটিক্যাল পদ্বতিও। ইসলামের এই সুমহান বাণী দেশে দেশে উঁচু-নিচু মানুষের অন্তর জয় করে নিয়েছে। ভুলিয়ে দিয়েছে বিভেদ বিসংবাদ, দাঁড় করিয়েছে ধনী-গরিবকে এক কাতারে। প্রজা-রাজা সবাই একই মাটিতে লুটিয়ে সিজদা করে। তৈরি করেছে এমন ভ্রাতৃত্বের বন্ধন যুদ্ধের ময়দানে মুমূর্ষু অবস্থায়ও নিজে পানি পান না করে অপর ভাইকে অগ্রাধিকার দান। ত্যাগের নজরানা পেশ করেছে নিজের জীবন বিপন্ন করে অন্যের জীবন সংরক্ষিত করে। তবে প্রতি যুগে যুগে ইসলামের সোনালি যুগের স্বর্ণালি অধ্যায়কে কলুষিত করতে কুচক্রী মহল-ধর্মবিদ্বেষীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে। রাসূল (সা)-এর যুগে যেমন ইসলামকে বিভিন্ন সংজ্ঞায়িত করবার চেষ্টা করেছে। পিছিয়ে নেই আধুনিক যুগের পশ্চিমাপন্থী লেজুড়বৃত্তিধারীরা। এভাবে আজকের ইউরোপ আমেরিকা যেভাবে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে রুখবার জন্য প্রতিনিয়ত ফন্দি এঁটে যাচ্ছে। ইসলামফোবিয়া শব্দটি প্রথমে ৭০ এর দশকে প্রচলিত ব্যবহার দেখা গেলেও এটা ১৯৮৯ সনে ইরানের সালমান রুশদির লেখা ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ হযরত মুহাম্মদ (সা)কে ব্যঙ্গ করেন। চতুর্দিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে, ইমাম খোমেনি রুশদির ফাঁসির আদেশ দেন। পাশ্চাত্যরা এটা নিয়ে বিশ্বে সমালোচনার ঝড় তুলেন। তখন থেকেই ইসলামফোবিয়া আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।

কিছু প্রতিবেদন ⇒ লোনওয়াচডটকম নামের একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে দেখা যায়, ২০১৭ সেশনে সংঘটিত ঘটনাবলির মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মুসলিমরা ০.৪% অমুসলিমরা ৯৬.০৬% সংগঠিত করেছে। ⇒ ১৯৮০-২০০৫ পর্যন্ত যেসব ঘটনা গঠেছে তন্মধ্যে অমুসলিমরা ৯৪.০০% মুসলিমরা ০.৬% ঘটনায় জড়িত। ⇒ পলিটিকস ফার্স্ট ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক মারকাস পাপাদোপুলাসের মত হচ্ছে, ব্রিটেন এবং আমেরিকা পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। প্রেস টিভিতে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ব্রিটেনের লোকজন ইসলামের বিষয়গুলো নিয়ে দ্বিধান্বিত। কারণ তারা সঠিকভাবে বিষয়গুলো জানে না। তারা মনে করে যে, সিরিয়া ইরাকে প্রভাব বিস্তারকারী ইসলামিক স্টেট ইসলাম সম্পর্কে যা বলে তা সত্যি। ⇒ ২০১৭ সালের পর্যবেক্ষণ সংস্থা টেলমামার এক বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এক বছরে ১ হাজার ২০১টি রিপোর্ট অনুমোদনের জন্য দেয়া হয়। এগুলো যাচাই বাছাই করার পর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ২০১৬ সালের ২৬ শতাংশ বেশি মুসলিমবিরোধী হামলার সাক্ষী হয়েছে ব্রিটেন। হামলার শিকার ১০ জনের মধ্যে ৬ জনই নারী এবং ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই পুরুষ এদের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। ⇒ এ প্রসঙ্গে টেলমামার পরিচালক ইমান আত্তা বলেন, আমরা খুবই উদ্বিগ্ন যে, আমাদের তরুণ সমাজ বিশেষ করে ছেলেরা মুসলিমদের প্রতি হামলার বিষয়ে খুবই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।

ইসলামফোবিয়া পাশ্চাত্যবাদীদের অন্যতম রোগ । মোহাম্মদ সাঈদী আলমকিছু ইসলামফোবিয়ার চিত্র ⇒ ফ্রান্সে ২৫০ জন রাজনৈতিক পিটিশন করে ইস্যু করে কুরআনের কিছু আয়াত জিহাদ সংক্রান্ত মুছে ফেলার জন্য আহবান জানিয়েছেন। তন্মধ্যে অন্যতম আয়াত হলো “অতঃপর যখন এ নিষিদ্ধ চার মাস অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন মুশরিকদের তোমরা যেখানে পাবে সেখানে হত্যা করবে, তাদের বন্দি করবে, তাদের অবরোধ করবে এবং তাদের (ধরার) জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে ওঁৎ পেতে বসে থাকবে, এরপরও যদি তারা তাওবা করে (দ্বীনের পথে ফিরে আসে) এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে, তাহলে তোমরা তাদের পথ ছেড়ে দাও; অবশ্য আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল ও বড়ো দয়াময়।” (সূরা তওবা: আয়াত ৫) এগুলো যখন নাযিল হয় তখনো শরিয়াত পুরোপুরি পরিপূর্ণতা পায়নি। আবার অনেক আলেম মনে করেন, এই আয়াতের কিছু অংশ রহিত হয়ে গেছে। ইসলামবিদ্বেষীরা কিন্তু পরের আয়াতে একটুও নজর বুলায় না। সেখানে বলা হয়েছে, “আর মুশরিকদের মধ্যে থেকে যদি কোন ব্যক্তি তোমার কাছে আশ্রয় চায় তবে অবশ্যই তাকে তুমি আশ্রয় দিবে, যাতে করে (তোমার আশ্রয় থেকে) সে আল্লাহ তায়ালার বাণী শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিবে; এটা এজন্যই যে আসলে এরা এমন এক সম্প্রদায়ের লোক তারা কিছু জানে না।” (সূরা তাওবা : আয়াত ৬) “দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই, কারণ সত্য এখানে মিথ্যা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে।” (সূরা বাকারা : আয়াত ২৫৬) তোমাদের পথ তোমাদের জন্য, আর আমার পথ আমার জন্য। (সূরা কাফিরুন : আয়াত ৬) আরো অসংখ্য আয়াতে এভাবে আহলে কিতাবদের সম্প্রীতির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এমনকি বিয়ের ব্যাপারে তাদের সাথে জায়েজ দেয়া হয়েছে। ⇒ ইসলামবিদ্বেষীরা মনে করে, বনু কুরাইযা গোত্রকে অনর্থক বহিষ্কার করে, হত্যার আদেশ দেয়, অথচ রাসূল (সা)-এর সাথে তাদের চুক্তি হয়েছে। বনু কুরাইযা গোত্র চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসলামবিরোধীদের সাথে সখ্য, মুসলিমবিনাশী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত হয়ে যায়। সেজন্য তাদেরকে বহিষ্কার করে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আলেম ফয়সালা দেন। তাদের পুরুষগুলোকে হত্যা করতে হবে। ⇒ তারা দেখেও না দেখার ভান করে রাসূল (সা) ইয়াহুদিদের বাড়িতে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। মদিনায় সকল গোত্রের সাথে ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পন্ন করেছিলেন যা খ্রিষ্টানদের বাইবেল খ্যাত মাগনাকার্টার অংশ হয়ে আছে। মদিনায় ইয়াহুদিদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ⇒ যদি খোলাফায়ে রাশেদার ২য় খলিফা হযরত ওমর শাসনব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য রাখি। ওনার সময়কার যখন জেরুজালেমকে অবরুদ্ধ করা হল তখন তিনি সেখানে ভৃত্যকে সাথে নিয়ে গেলেন। অনেকে মনে করলেন গাধার পিঠে যিনি চড়ে আসছেন তিনি ২য় খলিফা অথচ বসা ছিলেন ভৃত্য, নিজে হাতে ওমর (রা) দড়ি টানলেন। ইয়াহুদিদের পণ্ডিত সোফ্রেনিয়াসকে সাথে করে হযরত ওমর (রা) ঘুরে ঘুরে দেখলেন সেখানে তাদের অবরুদ্ধ তীর্থস্থান ছেড়ে দিতে বললেন। নামাযের সময় হলে সিনাগগে নামায পড়ার জন্য বললে তিনি বললেন, না তিনি ওখানে নামায পড়েননি। ঐটাকে মসজিদ বানিয়ে ফেলবে এই ভয় ছিল উনার। অন্য একটা স্থানে নামায পড়েন তার পার্শ্বে ৭০টি ইয়াহুদি পরিবারকে বসাবাস করার সুযোগ করে দেন। ঐ স্থানে ‘মসজিদে ওমর’ নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ⇒ ১০৯৯ সালে যখন খ্রিষ্টানরা যখন ক্রুসেড শুরু করে নিজেদের ধর্ম রক্ষার্থে মুসলিমরাও জড়িত হয়ে পড়ে। বিনা বিচারে খ্রিষ্টানরা অজ¯্র মানুষ হত্যা করে লাশের পাহাড় হয়ে যায়, অমুসলিমরা তখন তাদের সন্ত্রাসী বলেনি। মুসলমানরা যখন প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ করে তখন এটা সন্ত্রাস হয়ে যায়। স্পেনে যখন মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধারক বাহকের নতুন রূপরেখা তৈরি করে বাস্তবায়নের নতুন ধারা উন্মোচিত হলো। মুসলিম সভ্যতার সূতিকাগার রচনা করল স্পেনে মুসলিমরা। যে সময় আজকের ইউরোপীয়রা ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানের দিক দিয়ে। অথচ কর্ডোভাতে নৌকা ডুবিয়ে মসজিদে পুড়িয়ে রানী ইসাবেলা অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। তাদেরকে খ্রিস্টফোবিয়া বলে না। তাদের উত্তরসূরিরা নাকি ইসলামফোবিয়ার জ্বরে আক্রান্ত হয়। ⇒ ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির হিটলার, আমেরিকা কোটি মানুষ হত্যা করে তাদের বলা হয় না খ্রিস্টফোবিয়া ছড়াচ্ছে। বর্তমান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আরোহণের সাথে সাথে সাতটা মুসলিম দেশের মুসলমানদের প্রবেশে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। ইরান, কাতার, তুরস্কের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এটা কি প্রমাণ করে না সে ইসলামবিদ্বেষী? ⇒ চীনে লক্ষ লক্ষ উইঘুর মুসলমানদের নির্যাতন করে কষ্ট দেয়া হচ্ছে বন্দিশিবিরে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ধর্মীয়ভাবে মৌলিক বিষয়গুলো পালন করতে দিচ্ছে না। যারা করছে তাদের কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে। ⇒ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিশুদ্ধ উচ্ছেদ অভিযান। ১০ লক্ষাধিক মুসলমান জনগোষ্ঠীকে বাস্তুহারা করেছে বৌদ্ধরা হত্যা, ধর্ষণ রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে পালন করে। তাদেরকে টেরোরিস্ট বলা হয় না। ⇒ পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে ২০০১ সালে গুজরাটের মুজাফফর নগরে মোদি সরকারের ইন্ধনে হাজার হাজার মুসলিম গণহত্যার শিকার হন। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে। তারা তিরস্কৃত না হয়ে বরং পুরস্কৃত হয়। কোর্টের রায়ও দু-তৃতীয়াংশ রাম মন্দির নির্মাণের জন্য দিয়ে দেয়া হয়। ⇒ কানাডার কুইবেক শহরে ৬ মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করে। তখন কট্টরপন্থী রেডিওগুলো সমালোচনার মুখে পড়ে। সরকারের সমালোচনায় মুখে পড়ে ট্র্যাশ রেডিওগুলো যেগুলো ইসলামভীতি ছড়ায়। ⇒ ব্রিটেনের ল্যাঙ্কশায়ারের একটি স্কুলে একজন মুসলিম ছাত্র পরীক্ষার খাতায় ভুলে সে তার বাড়ি terroristলিখে ফেলে terraced house এর জায়গায় এটা দেখে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত করে ফেলে পুরো ফ্যামিলিকে সন্দেহের চোখে ফেলে পুরো এলাকাবাসীর কাছে ঐ বাড়িকে। পরে জানা যায় কিছুতেই তারা জড়িত নন। বিভিন্ন সময় পাশ্চাত্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে ইমিগ্রেশনের সময় হয়রানির শিকার হন মুসলমানরা নাম, দাড়ি, টুপি, পোশাকের কারণে। এগুলো কিসের কারণে এমন হচ্ছে? ইসলামকে ইচ্ছামত ব্যবহার করেছে স্বার্থান্বেষী মহল। ⇒ ৯/১১ টুইন টাওয়ারের হামলার পর মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি সন্দেহের চোখে দেখা হয়। অথচ এরা তাদেরই সৃষ্টি। ১৯৪৬ সালে ২২ জুলাই জেরুজালেমে কিংডেভিড হোটেল উড়িয়ে দিয়েছিল ইরগুন জাই লিউমি নামে এক ইয়াহুদি চরমপন্থী গ্রুপ। অথচ তাদের জায়োনিস্টফোবিয়া বলা হয়নি। ⇒ শান্তির দেশ বলা হয় যেটাকে নরওয়তে ব্রেইভিক নামের এক ইয়াহুদি ৭৭ জন মানুষকে গণহত্যা চালিয়েছে তাকে এরকম ফোবিয়ার সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। আজকের শান্তির ফেরিওয়ালা আমেরিকা সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে কোন শান্তির পয়গাম নিয়ে গণহত্যার লিজ নিয়েছে? ⇒ ইরাক, আফগান, সিরিয়াতে এখনো আইএস নামক এক ত্রাসসৃষ্টিকারী গ্রুপ জন্মদানের মধ্যে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য অশান্তির নরক বানিয়ে রেখেছে তখন তাদের কোন ধর্ম থাকে না? এই আইএস বর্তমান বিশ্বে কিছু দেশ থেকে বিভ্রান্তি করে জান্নাতের সার্টিফিকেট বিক্রি করে তরুণ তরুণীদের আকৃষ্ট করেছে। তরুণীদের যৌনকর্মী বানিয়ে রেখেছে। এ ছাড়াও ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত হত্যা, নির্যাতনের শিকার ইয়াহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল কতৃর্ক। ⇒ শুধুমাত্র অমুসলিমরা ফোবিয়ার জীবাণুতে আক্রান্ত নন মুসলিমরাও কমবেশি আক্রান্ত মুসলমানদের মধ্যে যারা বামদের প্রেতাত্মা তারা ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে বিষ ঢুকিয়ে বিভ্রান্তি করে চলেছে। বিশেষ করে ইসলামিস্ট পার্টিগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে দেশী-বিদেশী অপপ্রচার চালায়। এ ক্ষেত্রে প্রচারযন্ত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে মিডিয়াকে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন ইসলামাতঙ্কের কারণ হলো পাশ্চাত্যপন্থীদের ইসলাম নিয়ে অজ্ঞতাকে। তবে বর্তমানে কিছু ইতিবাচক দিক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। যথা- অস্ট্রেলিয়ায় মেলবোর্ন ইসলামিক মিউজিয়াম নামে একটি সংগঠন সহজভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করেছে সেখানে প্রত্যেক ধর্মের সাথে আলাদা বুঝাপড়া সৃষ্টি হয়। ইবাদত কৃষ্টি কালচার নিয়ে ইদানীং আরব, তুরস্ক, ইয়েমেন, ওমান ইত্যাদি দেশ থেকে লোক যাওয়ায় আরো কাছ থেকে বুঝার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ভীতিটা কেটে যেতে শুরু করেছে। জার্মানিতে সাপ্তাহিক একদিন মসজিদ সবার জন্য অবমুক্ত করা হয় সেখানে সবাই দেখবে, জানবে, বুঝার সুযোগ পায়। তারা ইসলামকে হৃদয়ঙ্গম করার পরিবেশ তৈরি করে। সেখানে মুসলমানদের বসাবাস করার পাশাপাশি সৌজন্যতাবোধ রক্ষা করে চলে। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ডিয়ারবর্নে মুসলমানদের সাথে খ্রিষ্টানদের ব্যাপক সখ্য গড়ে উঠেছে। যেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রেখে চলে। ফ্রান্সে গত বছর বিশ্বকাপ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাতজন মুসলিম খেলোয়াড় রয়েছে যেটা তাদের ভেতর কিছুটা হলেও সমীহ ভাব তৈরি হয়েছে। আজকে ইউরোপ আমেরিকায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইসলাম ধর্ম শিক্ষিত সমাজ দ্রুত এটাকে উপলব্ধি করতে পারছে একটা পরিসংখানে দেখা গেছে ২০৭০ সালে বিশ্বে জনসংখ্যায় এক নম্বর স্থান দখল করবে মুসলমানরা। ২০৫০ সালে ইউরোপে অর্ধেকের কাছাকাছি স্থানে জনসংখ্যায় মুসলিমরা পৌঁছে যাবে। আসলে মুসলমানদের বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বন্ধন যারা ভেঙে দিতে চায়; সেই অপপ্রচারকারী ইহুদি-খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের একটি মানসিক রোগের নাম ইসলামফোবিয়া, যা মুসলমানদের মূল উদ্দেশ্য থেকে দূরে রাখবার একটি চক্রান্ত মাত্র।

লেখক : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির