post

জানা

অজানা

০৩ সেপ্টেম্বর ২০১১
বাতাবি লেবুর হরেক গুণ বাতাবি লেবু পুষ্টিগুণে ভরপুর এক ফলের নাম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই ফল প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই ফল জাম্বুরা বা ছোলম নামেও পরিচিত। এ লেবু বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। কোনো জাতের ভেতর লাল টকটকে। কোনোটির ভেতর আবার সাদা। কোনোটির স্বাদ মিষ্টি আবার কোনোটির স্বাদ টক হয়। বাংলাদেশে মৌসুমি ফল হিসেবে এর যথেষ্ট সমাদর রয়েছে। বাতাবি লেবুর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। বাতাবি লেবু ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। শরীরের দূষিত ও বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে বাতাবি লেবুর ভূমিকা প্রমাণিত। বিভিন্ন ধরনের প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধে বাতাবি লেবুর রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যে কোনো ধরনের কাটা, ছেঁড়া ও ক্ষত সারাতে বাতাবি লেবুর জুড়ি নেই। যকৃৎ, দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায় বাতাবি লেবু অতুলনীয়। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় বাতাবি লেবু বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং বুড়িয়ে যাওয়া বিলম্বিত করে। ১০০ গ্রাম সমপরিমাণ এক কাপ বাতাবি লেবুতে রয়েছে- ক্যালরি ৩৭ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৯.২ গ্রাম, প্রোটিন ২.৪ গ্রাম, চর্বি ২ গ্রাম, ফাইবার বা আঁশ ১.২ গ্রাম এবং চিনি ৭ গ্রাম। অ্যাসিডিক হওয়ার কারণে খাদ্য পরিপাকে বাতাবি লেবু অত্যন্ত সহায়ক। হজম হওয়ার পর বাতাবি লেবুর রস অ্যালকালাইন রি-অ্যাকশন তৈরি করে হজমে সহায়তা করে। বাতাবি লেবুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বায়ো-ফ্লাভোনয়েড, যা ক্যান্সার কোষ বিস্তাররোধে সহায়তা করে। অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন থেকে শরীরকে মুক্ত রাখার কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় বাতাবি লেবু ভূমিকা রেখে থাকে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি থাকার কারণে ধমনীর ইলাস্টিক অবস্থা ও দৃঢ়তা রক্ষায়ও বাতাবি লেবু অত্যন্ত কার্যকর। জ্বর, ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতা, গলার ক্ষত, পাকস্থলী ও প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগ চিকিৎসা ও প্রতিরোধে এবং শরীরের ক্লান্তি ও অবসাদ নিরাময়ে বাতাবি লেবুর জুড়ি নেই। বাতাবি লেবুতে রয়েছে পেকটিন যা ধমনীর রক্তে দূষিত পদার্থ জমা হতে বাধা দেয় এবং দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদপিণ্ড সুরক্ষা এবং হৃদরোগজনিত জটিলতা থেকে শরীরকে রক্ষা করে। শরীরের ওজন কমাতেও বাতাবি লেবু সহায়তা করে। বাতাবি লেবুর ফ্যাট বার্নিং এনজাইম শ্বেতসার ও সুগার শোষণ করে ওজন কমাতে সহায়তা করে। রক্তের লোহিত কণিকাকে টক্সিন ও অন্যান্য দূষিত পদার্থের হাত থেকে রক্ষা করে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে। করলা তিতা হলেও উপকারী করলা স্বাদে তিতা, তবে উপকারী অনেক। এশিয়া অঞ্চলে হাজার বছর ধরে এটি ওষুধি হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অঞ্চলের আদিবাসীরাও বহু বছর ধরেই করলাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, হাম ও হেপাটাইটিসের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। ব্যবহার করে আসছে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, ম্যালেরিয়া জ্বরে এবং মাথা ব্যথায়ও। করলায় আছে পালং শাকের চেয়ে দ্বিগুণ ক্যালশিয়াম আর কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম। আছে যথেষ্ট লৌহ, প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং আঁশ। ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এন্টি অক্সিডেন্ট; বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখে, শরীরের কোষগুলোকে রক্ষা করে। আছে লুটিন আর লাইকোপিন। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লাইকোপিন শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট। করলা ইনসুলিন রেজিস্টেন্স কমায়। করলা এডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ নামক এনজাইম বা আমিষ বৃদ্ধি করে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোর সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের কোষের ভিতর গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়াও বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের সুগার কমে যায়। এছাড়াও করলা রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড কমায় কিন্তু ভালো কলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ায়। রক্তচাপ কমায় ও ক্রিমি নাশ করে। ক্যান্সাররোধী লিভার ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, মেলানোমা ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। ল্যাক্সেটিভ পায়খানাকে নরম রাখে, কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। জীবাণুনাশী-বিশেষ করে ই কোলাই নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে করলা কার্যকর।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির