post

আনোয়ার ইবরাহিম ইতিহাসের অনন্য দৃষ্টান্ত

ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

১৫ জানুয়ারি ২০২৩

একজন শিক্ষিত ব্যক্তির কাছে যেমন কোনো দেশই বিদেশ নয়, একজন মিষ্টভাষীর যেমন কোনো শত্রু নেই, ঠিক তেমনই যারা পরিশ্রমী, তাঁদের জন্য কোনো কিছুই জয় করা অসাধ্য নয়। পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছুর প্রাপ্তি সম্ভব নয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে কাজ করে যাওয়ার অভ্যাসই মানুষকে কর্মমুখর এবং আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাহায্য করে। অতএব নিজের লক্ষ্য পূরণের পথে কোনো ব্যক্তি যদি তার আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে চায়, তবে সব অবস্থাতেই তাকে কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে আর সেটাই তার সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি। মালয় ভূমিতে দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে এই দ্বীপ রাজ্যের নাম ছিল সুবর্ণ ভূমি। অসাধারণ সৌন্দর্যমণ্ডিত এই ভূস্বর্গে নানাভাবেই সভ্যতার উত্থান হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে উপনিবেশবাদী দস্যুবৃক্তির সূচনা হয়। মূলত ইউরোপীয় শক্তিগুলো এই অঞ্চলে আসে সমুদ্র দস্যুবৃত্তির জন্য, পর্তুগিজরা পূর্ব থেকে বিখ্যাত ছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশসহ ডাচ বিভিন্ন দস্যু বাহিনী তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে। আর এই সা¤্রাজ্যবাদী সন্ত্রাসীদের সাথে তৎকালীন বিভিন্ন রাজবংশ পাত্তানি, ইয়ালা, সুতান, নারথওয়াত প্রদেশ দখলদারিত্বের মাধ্যমে দখলদারিত্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ঠিক সে সময় একমাত্র মুক্তির আশা হিসেবে মুসলিম জনগোষ্ঠী অবশিষ্ট ছিল। তারাই সর্বপ্রথম এই উপনিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তাদের সমস্ত আগ্রাসনের বিপরীতে মালয় অঞ্চলের জনগণকে জিহাদ করতে জাগিয়ে তুলে।

১৮২৫-৩০ সালের মাঝে সংঘটিত জাবা যুদ্ধ, ১৮২১-৩৮ সাল পর্যন্ত চলা মিনানংকাবু পাদ্রি যুদ্ধ, ১৮৮৮ সালের কৃষক বিদ্রোহসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে মুসলমানরা শোষণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যুদ্ধ করেছে। কখনো পর্তুগিজ, কখনো ডাচ, কখনো স্প্যানিশ, ব্রিটিশ, আমেরিকান কিংবা সিয়ামিজ। প্রতিটি শক্তিকে বাধা দানকারী শক্তি একটিই ছিলো, তা হলো ইসলাম। সে জনপদে আবার সে অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছরের অপেক্ষা শেষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলেন আনোয়ার ইবরাহিম। তবে শুরু থেকেই তার রাজনৈতিক জীবন ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। অবশেষে তিনি মালয়েশিয়ার ১০ম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ১৯৯৮ সালেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এক সময়ের রাজনৈতিক গুরু আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার খ্যাত মাহাথির মোহাম্মদের কোপানলে পড়ে জীবনের দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। ২০২০ সালে জোট করে ক্ষমতায় এলেও মাহাথির শেষ পর্যন্ত কথা রাখেননি। কিন্তু এবার আর হতাশ হতে হয়নি। মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকায়েতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আসন না পেলেও সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দলের প্রধান হিসেবে দেশটির সুলতান আবদুল্লাহ আহমদ শাহ আনোয়ারকেই পছন্দ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। 

মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম ১৯৪৭ সালে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় পেনাং রাজ্যের চিরোক তক্কুন গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইবরাহিম আবদুর রহমান ছিলেন একটি হাসপাতালের কর্মচারী এবং পরবর্তীকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তার মা চে ইয়েন হুসেন একজন সাধারণ গৃহিণী ছিলেন। মালয়েশিয়ার জননন্দিত রাজনীতিবিদ আনোয়ার ইবরাহিম একজন ভাগ্যবিড়ম্বিত নেতা। আনোয়ার ইবরাহিম প্রথম নিজের নামটি তৈরি করেন একজন সম্মোহনী ও আগুনের মতো জ্বলে ওঠা ছাত্রনেতা হিসেবে। ছাত্র থাকাকালীন তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মালয়েশিয়ার মুসলিম তরুণদের সংগঠন ‘আনকাতান বালিয়া ইসলাম মালয়েশিয়া’। এরপর সবাইকে একরকম অবাক করে দিয়ে ১৯৮২ সালে তিনি যোগ দেন ‘ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও)’।

১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বহু পুরনো ইউএমএনও দলে যোগ দেওয়া ছিল তার রাজনৈতিক জীবনের একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। কেননা, এখানে তিনি দ্রুত নিজেকে রাজনৈতিকভাবে প্রস্ফুটিত করার সুযোগ পান। স্বল্প সময়ের মধ্যে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয় তার। ১৯৯৩ সালে তিনি মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী হন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। মাহাথির মোহাম্মদ সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার ইবরাহিম। পরিচিত ছিলেন ক্যারিশম্যাটিক, উচ্চাকাক্সক্ষী ও সংস্কারপন্থী রাজনীতিক হিসেবে। ভাবা হয়ে থাকে, মালয়েশিয়ার আজকের উন্নয়নের পেছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তাঁকে ভাবা হতো মাহাথিরের উত্তরসূরি। কিন্তু ১৯৯৮ সালে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেন মাহাথির। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সমকামিতার অভিযোগে মামলা হয়। তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে গেল। কিন্তু ক্ষমতার খেলা বড় বিচিত্র! ২০১৬ সালে এসে পাশার ছক বদলে যায়। ‘ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহার্ড’ কেলেঙ্কারিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের পদত্যাগ দাবি করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন মাহাথির। আন্দোলন গড়ে তোলেন নাজিব সরকারের বিরুদ্ধে। এই সময় রাজনৈতিক দরকষাকষির বাজারে কাক্সিক্ষত ব্যক্তি হয়ে ওঠেন আনোয়ার ইবরাহিম। মাহাথির রাজার কাছে আনোয়ারের সাজা মওকুফের আবেদন করবেন এবং নাজিব রাজাককে অপসারণের কিছুদিন পর আনোয়ারকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, দুজনের মধ্যে এই সমঝোতা হয়।

২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে শুরু হয় নতুন অধ্যায়। অবসর থেকে ফিরে ৯২ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদ আবারো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নামেন। এ যাত্রায় কারাবন্দি আনোয়ার ইবরাহিমের সঙ্গে জোট গঠন করেন মাহাথির। তার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে পাকাতান হারাপান জোট জয়লাভ করে। পতন হয় ৬১ বছর ক্ষমতায় থাকা জোট ব্যারিসান ন্যাশনালের। প্রধানমন্ত্রী হন মাহাথির। সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগি করার বিষয়টি থাকলেও এ নিয়ে গড়িমসি করেন তিনি। আর এতেই বাধে বিপত্তি। ২০২০ সালে পাকাতান হারাপান জোট ভেঙে যাওয়ায় সংকটে পড়ে দেশটি। জোট সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসে ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ইউএমএনও। মুহিউদ্দিন ইয়াসিন নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেও এক বছরের মাথায় পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে তিনিও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তখন প্রধানমন্ত্রী হন ইউএমএনওর ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। সবশেষ চলতি বছরের অক্টোবরে আগাম নির্বাচনের ডাক দেন তিনি। আর এই নির্বাচনেই পার্লামেন্টে পাকাতান হারাপান জোট সর্বাধিক আসন পাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেন আনোয়ার ইবরাহিম। ২৫ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা আর সংগ্রামের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সেই তিনি আনোয়ার ইবরাহিম।

আনোয়ারের শিক্ষক হুসিন আলী বলেছিলেন, আনোয়ারের মা ও তার বোনেরা সবাই ১০০ বছরের বেশি বেঁচেছিলেন। কাজেই তিনি ১০০ বছরের বেশি বাঁচবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই যে আনোয়ার আগে হোক আর পরে হোক প্রধানমন্ত্রী হবেনই। তার এই আশাবাদ অবশেষে সত্য হলো।

আনোয়ার ইবরাহিমের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে কেউ তুলনা করেন ‘রোলার কোস্টারের’ সঙ্গে, আবার কেউ কেউ তাঁকে তুলনা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। যেমন সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ফেলো ই সুন ওহ বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘আনোয়ারের রাজনৈতিক সংগ্রামকে অনেকটা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করা যায়। তাঁরা দু’জনই নিজ দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালুর লক্ষ্যে নানা মাত্রায় বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন।’

তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রধানমন্ত্রী হলেও বিদ্যমান পরিস্থিতি আনোয়ার ইবরাহিমের জন্য খুব মধুর কোনো স্মৃতি দিতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ, দেশটি কোভিড মহামারী, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এবং জ্বালানি সংকটের কারণে বেশ খানিকটা ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া পার্লামেন্টেও তাঁর দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এটি তাঁর জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আইন প্রণয়ন, বিভিন্ন বিল পাসের ক্ষেত্রে তাঁর কোনো আধিপত্য থাকছে না। পরিণতিতে তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আনোয়ার ইবরাহিম নিজেও পরিস্থিতি আঁচ করে নিজের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগেই তিনি এক সাক্ষাৎকারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, ‘আমি আমার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত।’ তবে, সন্দেহ নেই মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্ব আনোয়ার ইবরাহিমের জন্য বহু কাক্সিক্ষত। 


বারবার ক্ষমতার কাছে যেয়েও ভিতর ও বাইরের বিভিন্ন কারণে ছিটকে পড়লেও ২৪ বছর দুই মাস ২২ দিন পরে মালয়েশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আনোয়ার ইবরাহিম। দীর্ঘ এই পথযাত্রায় কাছের অনেকে পর হলেও তাঁর স্ত্রী ওয়ান আজিজাহর ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা, মনোবল ও লড়াই করার মানসিকতা আনোয়ারকে বারবার রাজনৈতিক মঞ্চে ফিরিয়ে এনেছে। সহ্য করতে হয়েছে অনেক অপবাদ, গঞ্জনা ও মানুষের টিটকারি। অথচ যিনি আনোয়ারকে বহিষ্কার করেন, তিনিই আজ জনগণ কর্তৃক বহিষ্কৃত। আকাশসম জনপ্রিয় মাহাথির মোহাম্মাদের যখন শেষ, ৭৫ বছরি ছয় সন্তানের জনক আনোয়ার ইবরাহিম তখন যুদ্ধজয়ী বীর। তাঁর এই অসম সংগ্রাম ও ধৈর্য সাহস জোগাবে অনাগত প্রজন্মের যে ‘জেতার আগে হারতে নেই’।

জনাব আনোয়ার ইবরাহিম যতটুকু না রাজনীতিবিদ তার  চেয়ে একাডেমিক সমাজ চিন্তক হিসেবে তাঁর লিখনি বক্তব্য তাকে আমাদের সামনে হাজির করছে। জ্ঞানপিপাসু আনোয়ার লিখেছেন- ‘আমার বাবার বইয়ের যে ক্ষুদ্র সংগ্রহ ছিল, সেখান থেকে এশীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি, জীবনী এবং মেনসিয়াসের বইগুলো সেই ছোট্ট বেলায় কেমন মনোযোগ সহকারে পড়তাম আর প্রচুর নোট নিতাম; তা আমার এখনও মনে আছে। ১৯৬০ সালে মালয় কলেজ কুয়ালা কাংসারের ইংরেজি গণপাঠশালার সাথে সংযুক্তির ফলে ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য এবং এর বড়ো বড়ো লেখকদের চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হতে সক্ষম হই। অতীতে আমি যুব-আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলাম বলে বিভিন্ন পটভূমি, সম্প্রদায় আর বিশ্বাসের লোকদের সাথে সাক্ষাৎ এবং ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ পাই। 

অন্যদের ব্যাপারে সহনশীলতার একটা মজবুত অনুভূতি গড়ে ওঠে। শুধু তাই নয়; বরং এক সচেতন ও ঐকান্তিক বিশ্বাসও জন্ম নেয়- আমাদের সবাই একই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। আর সে সম্প্রদায় হচ্ছে বিশ্ব মানব সম্প্রদায়।

বিশাল এক সামাজিক বিবর্তনের মধ্যে আমি বেড়ে উঠেছি, যেখানে ছাত্র আন্দোলন, ধর্মীয় পুনর্জাগরণ এবং রাজনৈতিক গোলযোগের সাথে বিভিন্ন আইডিয়া ও ঘটনার যুগপৎ উদ্ভব ঘটেছে। এগুলো চেয়ে চেয়ে দেখেই পরিতৃপ্ত থাকার পরিবর্তে আমি একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে চেয়েছি। গভীর চিন্তা ও একাকিত্বের জীবন সত্যিই মন-প্রাণকে উজ্জীবিত করতে পারে, তবে কর্ম ও ভ্রাতৃত্ববোধের সাথে গভীর ধ্যান জীবনকে উজ্জীবিত করতে পারে আরও বেশি। 

এশিয়ার অর্থনৈতিক উত্থান গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক হলেও এটা এ মহাদেশের আরও গভীর, ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী পুনর্জাগরণের একটি দিক মাত্র। সেটার নাম দেওয়া যেতে পারে এশীয় রেনেসাঁস। এশীয় রেনেসাঁস বলতে আমরা বোঝাতে চাচ্ছি-

চিরায়ত মডেলের প্রভাবে শিল্প ও বিজ্ঞানের পুনর্জাগরণ; যার ভিত্তি হচ্ছে শক্তিশালী নৈতিকতা ও ধর্ম। একটি সাংস্কৃতিক পুনরুত্থান, যার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পুনঃপ্রস্ফুটনশীল শিল্প-সাহিত্য, স্থাপত্য-সঙ্গীত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আপতি।

চতুর্দশ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যে সংঘটিত হয় ইউরোপীয় (ফ্লোরেন্টাইন) রেনেসাঁস। এর ভিত্তিস্তর ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক অধিকার লাভ এবং নৈতিকতা থেকে মুক্তি। এতে ছিল নিজের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য ব্যক্তির শক্তি লাভের তীব্র দাবি। ইহুদি-খ্রিষ্টানদের অতি ধার্মিকতার দুষ্টামি ছিল। ফলে এ দাবি রেনেসাঁসকে ঠেলে দেয় সেক্যুলার মানবতন্ত্রের বিকাশের দিকে। 

উইল ডুরান্ট যেমনটা লিখেছেন- ‘ব্যক্তিমানসের বুদ্ধিবৃত্তিক অধিকার লাভ নৈতিকতার আধ্যাত্মিক বিধিনিষেধকে দুর্বল করে দিলো। সেগুলোকে কার্যকরভাবে প্রতিস্থাপিত করার মতো অন্য কিছু পাওয়া গেল না। ফলাফলটা ছিল বিধিনিষেধসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি, আবেগ ও আকাক্সক্ষার এমন এক মুক্তি, অনৈতিকতার এমন এক উচ্ছল প্রাচুর্য, যাই মানুষের ব্যাপারে প্রমিথিউসের ধারণা আবিষ্কার করতে গিয়ে ইউরোপীয় রেনেসাঁস-চিন্তা প্রাচীন রূপকথাকে নতুনভাবে চালু করেছে। যে প্রমিথিউসকে স্বর্গের বিরুদ্ধে মানুষের বিদ্রোহ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তাকে নেতিবাচকভাবে না দেখে বরং ধর্মতত্ত্ব এবং প্রাকৃতিক নিয়ম থেকে স্বাধীন এক সত্তা হিসেবে লালন করা হয়। ইসলামের ধারণা হচ্ছে, মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি (খলিফাতুল্লাহি ফিল আরদ)। 

আধ্যাত্মিকতা থেকে মুক্তির তাড়নায় ইউরোপীয় রেনেসাঁস হয়ে দাঁড়ায় সংগঠিত নিয়ন্ত্রণের জুলুমবাজি থেকে মনকে স্বাধীন করার একটি আন্দোলন। সেইসঙ্গে এটি হয়ে উঠে নৈরাজ্য ও বস্তুবাদী সংস্কৃতি মেনে নেওয়ার অজুহাত। কিন্তু এশিয়ার রেনেসাঁস উৎকর্ষের একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে এশীয় সমাজগুলোর প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও বিকাশকে আবশ্যিক করে দেয়। এগুলো সত্য ও শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা, ন্যায়বিচার ও সমবেদনা, পারস্পরিক সম্মান ও আত্মসংযম এবং দায়িত্বশীলতার সাথে স্বাধীনতা দিয়ে অনুপ্রাণিত সমাজ। বিশ্বাস ও ধর্মীয় চর্চা ব্যক্তিতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সম্প্রদায়ের জীবনে প্রবাহিত হয়। অন্য যেকোনো সামাজিক শক্তির তুলনায় ধর্মই এশিয়াকে একটি বিপুল বৈচিত্র্যের মহাদেশ বানিয়েছে। এভাবে বিশ্বাসের নবায়ন এবং বহু সংস্কৃতির নিশ্চয়তা এশীয় রেনেসাঁসের অবিচ্ছেদ্য উপাদান। এশীয় রেনেসাঁসের এই চেতনাকে বাস্তবে রূপদান করতে গিয়ে কবি-দার্শনিক আল্লামা ইকবাল (১৮৭৩-১৯৩৮) লিখেছেন- ‘যেন আমি পারি ফিরিয়ে আনতে মুসাফিরকে তার আপন গৃহে, অলসতায় বুঁদ হয়ে থাকাদের মাঝে আনতে পারি অশান্ত ব্যাকুলতা; যেন এগিয়ে যেতে পারি উৎসাহের সাথে নতুনের সন্ধানে, আর পরিচিত হতে পারি নতুনের অগ্রদূতরূপে।’

রেনেসাঁসের নতুন পরিস্ফুটন যেহেতু মাত্রই দৃষ্টিগোচর হতে শুরু করেছে, তাই একে সফল করতে চাইলে এর লালন প্রক্রিয়া ধরে রাখতে হবে। আমরা একবিংশ শতাব্দীতে প্রবেশ করার কারণে কাজটা আরও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হিসেবে হাজির হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা বর্তমানের চেয়ে আরও জটিল ও দুর্বোধ্য হয়ে উঠবে। নতুন সহস্রাব্দের ভয়ানক বিপদগুলো আমরা কেবল নির্দেশনা ও প্রত্যয়ের স্পষ্ট ধারণার মাধ্যমে নির্ণয় করতে পারি সন্দেহ নেই, বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। কিন্তু এ বিষয়ে বর্তমান বিতর্ক ভুল বোঝাবুঝি আর পূর্বসংস্কারের পাঁকে আটকে পড়েছে। এর একদিক এশিয়ার ব্যাপক চুনকাম করছে, আরেক দিক অনবরত তাচ্ছিল্য করছে। এটা শুধু পশ্চিমের দোষগুলোর বিরুদ্ধে এশিয়ার গুণগুলোকে দাঁড় করানোর বিষয় নয়। 

উগ্র দেশপ্রেমের প্রলোভন-মন যা চায়, কল্পনায় যা আসে, রুচিতে যা ধরে, এরই ভিত্তিতে সৃজনশীল বস্তু সৃষ্টি এবং উপভোগের বাইরে ইউরোপীয় রেনেসাঁসের বহুমুখী বৈশিষ্ট্য দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃত হয়ে আসছে। সে সময় পুরো সমাজ ছিল রূপান্তরের মধ্যে। তার মূল্যবোধ, অভিরুচি, সামাজিক আচার-আচরণ, ব্যক্তি এবং সম্মিলিত ভাগ্যের কল্পনাশক্তি, ধর্ম ও নৈতিকতার ব্যাপারে মনোভাব, সবই বদলাচ্ছিল। অধিকন্তু এটা ছিল ‘শিল্পরাষ্ট্র’র উত্থান। কূটনৈতিক শিল্প, যুদ্ধের কৌশল ও দেশপ্রেম জন্ম নেয় এ পর্যায়ে। একইভাবে এশিয়ার রেনেসাঁস হচ্ছে এর সংস্কৃতি এবং সমাজগুলোর আটলান্টিক শক্তিসমূহের নিগড় থেকে মুক্ত হয়ে আত্মবিশ্বাসের দিকে রূপান্তর এবং নতুন সহস্রাব্দের সূর্যোদয়ে নতুন করে ফুটে ওঠা। ‘মহারোহণ’-এর সাথে সাথে এখানকার জনগণের জীবনযাত্রার মানে যে বিপ্লব এসেছে, সেগুলোকে শক্তিশালী করার সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান দিক হচ্ছে  বাণিজ্য আর গতিময় শিল্পসমূহ যে যুগে অর্থনৈতিক শক্তির তুলনায় সামরিক শক্তির গুরুত্ব বেশি, সেখানে এশিয়ার কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হতে পারে না। ব্যক্তি মানবের মর্যাদা ও পবিত্রতার ধারণার এক পুনরাবিষ্কার নাগরিক সমাজ এবং মানবিক শাসনের প্রবন্ধিকে গতিশীল করবে। এশীয় এবং অন্যান্য মানবজাতির ঐতিহ্যের মূলে এ ধারণাই প্রোথিত। এদের মধ্যে এশিয়া হয়তো বিশাল অর্থে তার দার্শনিকদের মানসজীবন এবং শিল্পীদের সৃজনশীল শ্রমের ফলে সমৃদ্ধ হবে।

আমরা এক আপাতবিরোধিতার যুগে বাস করছি। ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় স্বৈরাচারী শাসনগুলো ব্যাপকভাবে অবরোধের মধ্যে আছে এবং গণতন্ত্র তার বিভিন্ন রূপে পৃথিবীর অনেক বেশি জায়গায় পৌঁছে গেছে। তারপরও পদ্ধতিগত সহজাত অসঙ্গতি ও দুর্বলতার কারণে গণতন্ত্র ও রাজনীতির ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান একটি হতাশা রয়েছে। সুশীলসমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থার মূলে ঝাঁকুনি লেগেছে।

সত্য কথা হচ্ছে, মানব অস্তিত্ব ও লড়াইয়ের বহু সহস্রাব্দ পেরিয়ে গেলেও মানুষ অনেক কিছুই পরিত্যাগ করতে পারেনি। আর যথারীতি বোঝা তাদের ওপরই চেপে বসে যারা এটা বইতে সবচেয়ে বেশি অক্ষম। তারা হচ্ছে দুস্থ ও দুর্বল শ্রেণি। বহুবার মানবতার কান্না পৃথিবীকে সংশোধনের দিকে এগিয়ে দিয়েছে। কখনো কখনো আমরা সফল হয়েছি, কিন্তু প্রায়ই আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ছিলাম সমাধানে দুর্বল, প্রচেষ্টায় অপর্যাপ্ত, সেবা ও ত্যাগে অনিচ্ছুক এবং নিজেদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থ নিয়ে অতি মাত্রায় ব্যস্ত। এটা আমাদের অভিজাতদের ব্যর্থতার ব্যাপারে একটি স্পষ্ট অভিযোগ। যারা নেতৃত্বে আছেন, সাধারণত তাদের অন্যান্য দায়িত্বের মধ্যে একটি থাকে- জনগণের খেয়াল-খুশি ও অলীক কল্পনায় উৎসাহ জোগানোর পরিবর্তে যৌক্তিক দোষারোপ নিয়ে কাজ করা। এই খেয়াল-খুশি ও অলীক কল্পনা আবার জনমতের প্রতিফলন আজকাল প্রায়শই নেতৃত্বের মূলে যারা আছে, তাদের যা নৈতিকভাবে সঠিক, তার বদলে যা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক, তা-ই করতে হয়। আরেক পক্ষ আবার হুকুম প্রদানের দ্বারা শাসন করে। তারা ভুলে যায়, ভিন্নমতের প্রকাশও গণতন্ত্রের সত্যিকার একটা ব্যারোমিটার।

একটি সুশীলসমাজ কিংবা রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য জনগণ যখন চুক্তিবদ্ধ হয়, তখন একটি সাংগঠনিক নীতির প্রয়োজন পড়ে। এটা ছাড়া সামষ্টিক ঐক্য সম্ভব নয়। এই নীতির নাম হচ্ছে ন্যায়বিচার। অ্যারিস্টটল বলেন- ‘রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার জনগণের মধ্যে ঐক্য আনে। কারণ, একটি রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার মূলনীতি হচ্ছে ন্যায়বিচার। ন্যায়বিচারই ন্যায়পরায়ণতা নির্ধারণ করে।’ সুশীলসমাজে ন্যায়বিচারের নীতিগুলোর গুরুত্ব এত বেশি যে, এটা ছাড়া আইনের কোনো অর্থ হয় না।

সেন্ট অগাস্টিন বলেন- ‘ন্যায়পরায়ণতার নীতি ছাড়া আইন হতে পারে না এবং ন্যায়বিচার ছাড়া সেই রাজ্য চৌর্যবৃত্তির কারখানায় পরিণত হয়।’ স্যার টমাস একুইনা বলেছেন- ‘আইনের শক্তি নির্ভর করে ন্যায়বিচারের অবস্থানের ওপর। অকওক অ্যালেক্সি দি টকোভিল বলেছেন, ‘মানবজাতির বৃহত্তর অংশ একটিমাত্র সর্বজনীন আইন রচনা করেছে, আর তা হচ্ছে ন্যায়পরায়ণতা। প্রত্যেক জাতির জন্য ন্যায়পরায়ণতা হলো আইনের ভিত্তি।’ কুরআন সুস্পষ্টভাবে উদ্ধৃত করেছে- ‘যখন তুমি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করবে, তা যেন ইনসাফপূর্ণ হয়। একইভাবে মুসলিম দার্শনিক আল ফারাবি ন্যায়বিচারকে একটি ন্যায়ানুগ ভূখণ্ডের নেতা ও জনগণের প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন।’

সেলাঙ্গোর একটি মসজিদে নামাজের পর নতুন গাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম ঘোষণা করেন, নিজেদের সুবিধার জন্য সরকারি টাকা ব্যবহার করবেন না। তিনি মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য কেনা মার্সিডিজ বেঞ্জ এস৬০০ লিমুজিন গাড়ি ব্যবহার করতেও অস্বীকার করেছেন। এর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে থাকা যেকোনো একটি গাড়ি আনোয়ার ইবরাহিম ব্যবহার করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি চাই না আমার ওপর নতুন কোনো খরচ হোক। ব্যবহারের জন্য কোনো নতুন সরকারি গাড়ি কেনা হবে না এবং তার অফিস কোনো নতুন অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কিনবে না। পাবলিক ফান্ডের অপচয়ের বিরুদ্ধে এটি একটি নতুন সংস্কৃতির অংশ; যা সবার অনুশীলন করা উচিত। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে আনোয়ার ইবরাহিম বলেন, ১০০, ১০০০ বা ১০,০০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত- আপনি কতটুকু সংরক্ষণ করতে পারেন তা নিয়ে ভাবুন। তিনি বলেন, আমি বেতন না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শুরু করেছিলাম। আরও যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো আমাদের যে তহবিল আছে তা নষ্ট না করা। সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটি সব বিভাগের কর্মকর্তাদের মনে রাখার বার্তা যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের একটি নতুন সংস্কৃতি শুরু করা উচিত। নিজেদের সুবিধার জন্য সরকারি টাকা ব্যবহার করবেন না। 

গত ১৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী মূল দুই জোটের কোনোটি ২২২ আসনের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। নির্বাচনে আনোয়ার ইবরাহিমের পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সর্বোচ্চ ৮২টি আসনে জয় পায়। আর মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দল পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) পেয়েছে ৭৩ আসন। বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোট বারিসান ন্যাসিওনাল ৩০টি আসন পায়। কিন্তু তারা কোনো জোটকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে কোনো পক্ষই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারেনি। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক অচলাবস্থা অবসানের দায়িত্ব পড়ে সুলতান আবদুল্লাহ আহমাদ শাহ-এর ওপর। তিনি দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি আগের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে পরামর্শ করে আনোয়ার ইবরাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। কয়েক বছর ধরে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে তাতে স্থিতিশীলতা ও স্বস্তির সুবাতাস ফিরবে এবং আশা করা যায়, আনোয়ার ইবরাহিম তার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বশৈলী ও পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়াকে সঠিক পথেই পরিচালিত করবেন। 

লেখক : সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির