post

নতুন বছরের আগমন

ছাত্রসংবাদ ডেস্ক

সবাইকে জানাই ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বাংলাদেশে দীপ্তিময় হোক নতুন বছর। পরিবর্তনের এই হাওয়ার তালে নিজেকে যেন সবার আগে পরিবর্তন করতে পারি। পরিবর্তন হোক সবার মনের বাগিচায় জমে থাকা আগাছাগুলো- নতুন ভোরের সোনালি রোদের মতো ফুটে উঠুক অভ্যাস ফুলের নতুন কলি। তবেই স্বার্থক হবে নতুন বছরের আগমন। 

সময়ের ভেলায় চড়ে আমরা প্রতিনিয়তই চলছি আখিরাতের পথে। দুনিয়ার এই মুসাফিরি জীবনের সফর শেষে পাড়ি জমাতে হবে অনন্তকালের জীবনে- আলমে আখিরাতে। দুনিয়ার এই ক্ষণজীবনে যে যতটুকু আমল করবে পরকালে সে ততটুকুই প্রতিদান পাবে। ভালো কাজ করলে যেমন পুরস্কার পাবে আবার মন্দ কাজ করলে পাবে তার শাস্তিও। সূরা যিলযালে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, ‘‘সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে, তা সে দেখতে পাবে। এবং কেউ অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলে, তাও সে দেখতে পাবে’’ (যিলযাল : ৭-৮)। নতুন বছর আমাদের সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়- নতুন বছরের আগমন মানে জীবন থেকে আরো একটি বছর হারিয়ে যাওয়া। সুতরাং জীবনের ভুলগুলো এবং খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে পারলেই নতুন বছর আপনাকে নতুন করে তৈরি হতে শেখাবে। আমলের বাগানে ফুল ফোটাতে পারলেই পরকালে পাওয়া যাবে তার ফলাফল। আসুন নতুন বছরে নিজেকে নতুন করে গড়ার শপথ নিই।

নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ ও জাতীয় ঐক্য

নানা চড়াই উতরাইয়ের মধ্যদিয়ে অতিবাহিত হয়েছে ২০২৪ সাল। নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ২০২৪। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কত ঘটনাই না ঘটেছে গত বছরে। ফিলিস্তিনের দুই সিপাহসালার ইসমাইল হানিয়া এবং ইয়াহিয়া সিনওয়ারের শাহাদাত। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহর শাহাদাত। আমেরিকায় ট্রাম্পের নতুন ক্ষমতায়ন। সিরিয়ার ফ্যাসিস্ট বাশার আল আসাদের পলায়ন। তন্মধ্যে বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থান অন্যতম এক বিরল ঘটনা। দীর্ঘদিনের ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যখন অসম্ভব মনে করে সকল রাজনৈতিক দল রাজপথ ছেড়ে ঘরে ঢুকে গেছে ঠিক তখনই আল্লাহর অপার মহিমায় ছাত্র-জনতার হাত ধরে আসে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান। অবশেষে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ফ্যাসিস্ট হাসিনা। এটা এক অলৌকিক ঘটনা বললেও ভুল হবে না। তবে ফ্যাসিস্ট সরকার ভারতের কাছে যে গোলামীর জিঞ্জির পরিয়ে দিয়ে গেছে তার থেকে মুক্তি পেতে প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে ছাত্র-জনতার। দিন যত গড়াচ্ছে ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ ততই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে ২০২৫ সাল হবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জে মোকাবিলার বছর।

তবে ড. ইউনুসের সরকার প্রতিবারই ষড়যন্ত্র নসাৎ করে দিতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি ফ্যাসিস্টদের দোসর ছাড়া বাদবাকি সবগুলো রাজনৈতিক দল ইউনুস সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা আমাদের জাতীয় ঐক্যের জন্য এক বিরাট মাইল ফলক হয়ে থাকবে। এই ঐক্য যতদিন থাকবে ততদিন কোনো ষড়যন্ত্রই এই জাতির ভবিষ্যৎ স্বপ্নকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। সব ষড়যন্ত্র এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করে ড. ইউনুসের সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দেশকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

ছাত্র-জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান থাকবে, ষড়যন্ত্র যেহেতু থেমে নেই; আমাদের ঝিমিয়ে পড়লে চলবে না। ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও যদি কোনো ত্রুটি করে থাকে তাদেরকেও প্রয়োজনীয় সংশোধনী দিতে হবে। তবেই স্বার্থক হবে জুলাই বিপ্লবের বিপ্লবীদের ত্যাগের মহান নজরানা। পলাশী থেকে জুলাই বিপ্লব; যারাই স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে সকল শহীদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সবার শাহাদাত কবুুল করুন। আমিন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির