ইসলামী আন্দোলন করা সত্ত্বেও অনেক লোক আছে যাদের পরিবারের সাথে একজন ‘আন্দোলনের কর্মী’ হিসেবে তেমন ভালো সম্পর্ক নেই। এমনিতে হয়তো আছে- ভালো ছাত্র হিসেবে। অথবা সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ভদ্র ও কোমল হৃদয়ের মানুষ হিসেবে। কিন্তু আন্দোলনের সার্বিক চরিত্রের বৈশিষ্ট্যের আলোকে অনেক সময় দেখা যায় আপন ভাই আন্দোলনের ভাইটিকে বাধা দিচ্ছেন, মা বাধা দিচ্ছেন। বাবা বকা দিচ্ছেন। অথবা আত্মীয়স্বজন মায়ের কানে কানে এসে ফিসফিস করছেন। আর আমরা ময়দানে ভালো ভূমিকা রাখার পরও ঘরে এসে কিছুটা হলেও মন খারাপ করে সময় কাটাতে বাধ্য হই। এর মূল কারণ কী?
আমার কাছে মনে হয় এর মূল কারণ হলো- আমাদের দৈনন্দিন সাংগঠনিক কাজকর্মের সাথে আমাদের পরিবারের সদস্যদের দূরত্ব। অর্থাৎ আমরা যে কাজগুলো করি সেই কাজগুলো সম্বন্ধে পরিবারের সদস্যরা ওয়াকিবহাল না থাকার কারণেই বাধার সম্মুখীন হই। যদি তাদেরকে আমাদের সমস্ত কাজকর্ম কৌশলে পরিকল্পনা করে দেখানো যেত তাহলে অবশ্যই উনারা আমাদের কাজ ও আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং স্পেস দিবেন।
আমার জীবনের একটা উদাহরণ দেই। আমি যখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিলাম তখন আমার আপন দুই ভাই আছে এরা আমার আশপাশে কমই আসতো। এর কারণ তারা আমাকে জানতো আমি শিবির করি সেই হিসেবে। আমার কাছে আসলেও তারা সময় দিত না। এমনকি আমার খালা-খালুও আমার কাছে তাঁদেরকে এত বেশি আসতে দিতেন না। এর কারণ তাদের সাথে আমার সমস্ত কাজ-কর্মের অনেক দূরত্ব ছিলো। তারা জানতেন না আমি কি করি। আমি সব সময় চেষ্টা করতাম কিভাবে এদের সাথে একজন ভাইয়ের সম্পর্ক ছাড়াও এবং খালার সাথে একজন বোনের ছেলে ছাড়াও আন্দোলনের মানুষ হিসেবে সম্পর্ক স্থাপন করি। অনেক চেষ্টা করেও সেটা সম্ভব হয়নি। সে জন্য আমি চেষ্টা করলাম তাদের সাথে সাহস করে আমার সমস্ত কাজ-কর্ম আমি শেয়ার করবো। শুরুটা হয়েছিলো একটি দোয়া নিয়ে। আমি নামাজ পড়ি দেখে স্বাভাবিকভাবেই আমার খালাম্মা আমাকে অনেক ধর্মীয় বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেন। সেই সূত্রেই একদিন আমাক একজন প্রখ্যাত আলেমের কাছ থেকে দোয়া চাইতে বললেন। আমি সেই কাজটি করলাম। আলেম দোয়া করে দিলেন। আমি ভালোভাবে খালাকে বুঝিয়ে দিলাম। আমার খালা খুশি হলেন।
এভাবে আমি তাদের সাথে শুরু করলাম। একটা সময়ে তাদের সাথে আমার সম্পর্ক খুবই বৃদ্ধি পেলো। আমার সমস্ত প্রোগ্রাম, আমার বইপত্র ও আমার কাজের বেশিরভাগ অংশই আমি তাদের কাছে পরিষ্কার করে দিলাম।
এর কয়েক বছর পরের ঘটনাটি আমার খালাতো ভাইদের মধ্যে ছোট ভাই শেখ আবদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস বিভাগে চান্স পাওয়ার পর ঘটলো। আমার খালু এক সন্ধ্যায় আমার কাছে এসে বললেন, ‘শেখ আব্দুল্লাহ তো চলে যাবে ঢাকা। আন্দোলনের দুইজন ছেলে আসছিলো। তারা মেস দেখবে। তুমি কি বলো আন্দোলনের ছেলেদের মেসেই সে উঠুক। এতে তার চরিত্র ও ঈমান আমল ভালো থাকবে।’ আমি বললাম, ‘অবশ্যই মামা ঠিক আছে। এতে করে আমার ভাইটি আরো নামাজি, আরো বেশি ধার্মিক হয়ে উঠবে।’
খালু চলে যাওয়ার পর আমার চোখে পানি চলে আসলো। একটা সময় খালা ও খালু আমার সাথে অর্থাৎ ছাত্রশিবিরের সাথে মিশতে দিতেন না অথচ আজ তিনি এসে আমার কাছে এভাবে বলছেন। যদিও আমি মনে করি না আমার এতে তেমন ভূমিকা আছে। তবে আমার কাছে মনে হয় খালু আমাদের অনেক প্রোগ্রাম পাশের রুম থেকে শুনেছেন। একদিন আমি ও আমার একজন দায়িত্বশীল পাশের রুমে কিছু লোককে জড়ো করে কুরআন শিক্ষা, মাসয়ালা-মাসায়েল ও নামাজ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। খালু সেই প্রোগ্রাম পাশে থেকে শুনেছেন।
ঘটনাটা এজন্য বললাম, আমার কাছে মনে হয় উনারা আমাকে সহ এবং শেখ আব্দুল্লাহ যেহেতু সাথী হয়েছিলো সেহেতু তার আগের সময়ের নামাজের চেয়ে আরো বেশি নামাজে মনোযোগী হওয়া, ফজরে মসজিদে উপস্থিত থাকা, টাখনুর উপরে প্যান্ট পরিধান করা ও কোমল মেজাজের কারণে পরিবারের মধ্যে একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে। যার কারণে খালু নিজে থেকে খুঁজে খুঁজে ছাত্রশিবিরের মেসেই নিজের সন্তানকে জায়গা করে নেওয়ার জন্য উদগ্রীব হন। আমি মনে করি এই কাজটা সম্ভব হয়েছে এজন্য যে, উনারা আমাদের সাংগঠনিক কাজ সম্বন্ধে জেনেছেন, বুঝেছেন এবং একেই নিরাপদ মনে করেছেন।
আম্মুদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা আরো কিছু ইফেক্টিভ কাজ করতে পারি। যেমন, মহিলারা স্বাভাবিকভাবেই নফল ইবাদাতের প্রতি বেশি দরদি। যেমন, আমি দেখেছি অনেক মহিলা ফরজ পর্দা না করলেও নফল রোজা রাখতে ভুলেন না। সেক্ষেত্রে আমরা আম্মুদেরকে সাথে নিয়ে নফল ইবাদতের আলোচনা করতে পারি। মহিলারা মৃত্যু ও আখেরাত নিয়ে অনেক আবেগপ্রবণ। মৃত্যু ও কবরের আজাবের কথা শুনলে আমাদের মায়েদের অন্তর কেঁপে ওঠে। আমরা টিসি, টিএস এ আখেরাত নিয়ে যে আলোচনা শুনি, ঈমান বৃদ্ধি নিয়ে যে আলোচনা শুনি, সাহাবায়ে কেরাম নিয়ে যে আলোচনা শুনি কিংবা সম্মানিত মহিলা সাহাবি রা.-দের নিয়ে যে আলোচনা শুনি তা নিয়েও প্রতিদিন আম্মুদের সাথে গল্প করতে পারি।
আমরা আসহাবে রাসূলের জীবনীতে মহিলা সাহাবীদের জীবনী পড়ি। উম্মুল মুমিনীনের জীবনী পড়ি। সময়ে সময়ে আমরা এগুলো আম্মুদের-বোনদের সাথে শেয়ার করতে পারি। এতে আমাদের মধ্যে যে ইসলামী চরিত্র আছে সে সম্বন্ধে পরিবারের মধ্যে একটা পজিটিভ ভাবনা আসতে পারে। সূরা ইয়াসিন মহিলাদের অনেক প্রিয় সূরা। মুসলমান ধার্মিক পরিবারের মহিলাগণ শুধু ইয়াসিন খতম দিতেই অভ্যস্ত। সেক্ষেত্রে আমরা ইয়াসিন সূরা থেকে সুন্দর সুন্দর, হৃদয় প্রশান্তকারী আয়াতগুলো আম্মুদেরকে শুনাতে পারি। আরেকজন ভাইয়ের একটি ঘটনা বলি: আমাদের একজন ভাই একদিন ফজরের নামাজ পড়ে তার আম্মাকে একটি হাদিস শুনাচ্ছিলেন। হাদিস শুনে উনার আম্মা অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে যান। এবং আরো বেশি বেশি তার নিকট হাদিস পড়ার আবেদন জানান। সেই ভাইটি মাওলানা আব্দুর রহীম (রহ)-এর ‘হাদিস শরীফ’ তার মাকে উপহার দিল। যে হাদিসটি তিনি পড়েছিলেন সেটি হলো,- ‘হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন: এক ব্যক্তি বললো, লোকদের মধ্যে অধিক বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ও সতর্ক ব্যক্তি কে? উত্তরে নবী করীম সা. বললেন, লোকদের মধ্যে যে মৃত্যুকে সবচেয়ে বেশি স্মরণ করে এবং উহার জন্য যে সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি গ্রহণ করে। তারাই হচ্ছে, প্রকৃত বুদ্ধিমান ও হুঁশিয়ার লোক যারা দুনিয়ার সম্মান ও পরকালের মর্যাদায় উভয়ই লাভ করতে পারে।’
এভাবে আম্মুদের সাথে আমাদের সম্পর্ক বৃদ্ধি হতে পারে। আমরা আমাদের বোনদের সাথেও এভাবে সম্পর্ক রাখতে পারি। ছোট ছোট পর্দার বই, কোটেশন, আইসিএস-এর স্টিকার ইত্যাদি দিয়ে সম্পর্ক গড়তে পারি।
সম্পর্ক গড়ার পরে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজন হয়, পরিবারে ইসলামী পরিবেশ বজায় রাখা। অনেক সময় দেখা যায়, ঘরের মহিলা সদস্যাগণ নামাজ পড়ছেন কিন্তু মাহরাম-গায়রে মাহরাম এসব বিষয় উনারা বুঝেন না। সবার সামনেই বের হয়ে যান। সেক্ষেত্রে আমরা হতে পারি পরিবারে পর্দার বিধান প্রতিষ্ঠা করার নিয়ামক শক্তি। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াত আমরা ভালোভাবে পরিবারে শিক্ষা দিতে পারি। আয়াতটি দিয়ে স্টিকার বানিয়ে খাওয়ার রুমে টেবিলের পাশে অথবা ড্রয়িং রুমে কিংবা মা ও বোনের রুমে সাজিয়ে রাখতে পারি। এতে করে উনাদের কাছে আমাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নিজের আপন বোনকে ভালো একজন ছাত্রী সংস্থার সঙ্গী খুঁজে দিন। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বন্ধু বাছাই করা এই যুগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত কবি সেখ সাদীর একটি কথা আমরা সবাই জানি, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’। আমরা যদি প্রিয়নবী রাসূল সা.-এর আরো সুন্দর একটি হাদিসের দিকে তাকাই। তিনি বলেছেন, ‘সৎ সঙ্গী এবং অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ হচ্ছে আতর বিক্রয়কারী এবং কামারের হাপরের ন্যায়। আতরওয়ালা তোমাকে নিরাশ করবে না; হয় তুমি তার কাছ থেকে ক্রয় করবে, ক্রয় না করলেও তার কাছে সুঘ্রাণ পাবে। আর কামারের হাপর, হয় তোমার বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে, নচেৎ তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে আর না হলে দুর্গন্ধ পাবে।’ (বুখারি-২১০১)
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদের পিতা ও ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরিকে প্রিয় মনে করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারাই জালিম। (সূরা তওবা : ২৩) অর্থাৎ আল্লাহ এখানে একমাত্র মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। আমরা যারা আন্দোলন করি অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের মা-বোনদের পর্দা ঠিক থাকে না। হয়তো বোন আমার সামনে পর্দা করছে কিন্তু ক্যাম্পাসে গেলে প্রিয় বোনটি কার সাথে মিশছে, কাকে বন্ধু বানাচ্ছে। সেই বন্ধুটি পর্দা করে কি না। এসব বিষয় খেয়াল রাখি না। এসকল বিষয় নিয়ে পরিবারে অবশ্যই সব সময় আলোচনা, দারস ও নিয়মিত গল্প করতে হবে। একই কাজ ভাইদের বেলায়ও করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে জীবনযাপন করি আমার আপন ভাই ঠিক এর বিপরীতে চলে। এতে করে পরিবারে ও নিজের মধ্যে এক ধরনের অশান্তি কাজ করে। এজন্য নিজের ভাইদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে যেন তারা এমন বন্ধুদের সাথে না মিশে যারা তাদের জীবন ইসলামের বিপরীতে পরিচালনা করে। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’ (সূরা তওবা : ১১৯)
বর্তমান সময়ে এমনকি ধার্মিক মুসলিম ঘরেও টিভি সিনেমা অহরহ চলে। অনেক ঘরে তো স্টার জলসা, জি বাংলার মতো পরিবারবিমুখ চ্যানেল দেখা হয়। মনে রাখতে হবে এসব চ্যানেল আমাদেরকে পরিবারহীন করার জাহেলি উপাদান। ঘরের মধ্যে আন্দোলনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বক্তব্য, ওয়াজ, ইসলামী গান দেখা ও শোনার রেওয়াজ চালু করতে হবে। আধুনিক সময়ে ইউটিইউবের মাধ্যমে অনেক অশ্লীল কনটেন্ট সামনে চলে আসে। সেক্ষেত্রে মা-বোন ও ভাইকে ইসলামী চ্যানেলগুলো সাবসক্রাইভ করে দিতে হবে। যেন সহজেই উনারা ইসলামী কনটেন্ট পেতে পারেন।
এতে করে আমাদের প্রতি পরিবারের সবারই একটা পজিটিভ ধারণা জন্ম নিবে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ বুঝবেন আমরা আসলে কী চাই। আমরা যে ইসলামকে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে কায়েম করতে চাই এবং এই উদ্দেশ্যেই যে আমাদের জীবন আমরা পরিচালিত করি। এই উদ্দেশ্যেই যে আমরা আমাদের পড়াশুনা, চলাফেরা আচার-ব্যবহার ও উত্তম আচরণ করে থাকি তা পরিবারের নিকট স্পষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। যেকোনো সম্পর্কই দূরত্ব থেকে ভুল বুঝাবুঝির তৈরি হয়। আমাদেরকে আমাদের কাজ, আমাদের উদ্দেশ্য ও আমাদের চাল-চলন গোপনে না করে প্রকাশ্যে প্রজ্ঞার সাথে পরিবারে তুলে ধরতে হবে। সর্বোপরি পরিবারের সাথে আন্দোলনের সম্পর্ক গড়তে হলে, পরিবারকে আন্দোলনমুখী করতে হলে আমাদেরকে সব সময় দোয়া করতে হবে। আল্লাহ বলেন, আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন’। (সূরা ফুরকান : ৭৪)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী (রহ) বলেন, “তাকওয়া-আল্লাহভীতি ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ক্ষেত্রে আমরা সবার চেয়ে এগিয়ে যাবো। কল্যাণ ও সৎকর্মশীলতার ক্ষেত্রে সবার অগ্রগামী হবো। নিছক সৎকর্মশীলই হবো না বরং সৎকর্মশীলদের নেতা হবো এবং আমাদের বদৌলতে সারা দুনিয়ায় কল্যাণ ও সৎকর্মশীলতা প্রসারিত হবে। একথার মর্মার্থ এই যে, এরা এমন লোক যারা ধনদৌলত ও গৌরব-মাহাত্ম্যের ক্ষেত্রে নয় বরং আল্লাহভীতি ও সৎকর্মশীলতার ক্ষেত্রে পরস্পরের অগ্রবর্তী হবার চেষ্টা করে।”
আমি এসব কথা বললাম, আমার পরিবার ও আমার অভিজ্ঞতা থেকে। আপনারা হয়তো আরো ভালোভাবে, আরোও সুন্দর করে প্রজ্ঞার সাথে বিষয়গুলো সমাধান করবেন। আপনারা আপনাদের পরিবারের বৈশিষ্ট্য, আচার, প্রকৃতি ও অভিজ্ঞতা থেকে বুঝে শুনে সেভাবে বিষয়গুলো অ্যাপ্লাই করবেন। এতে করে ইনশাআল্লাহ কাজ দিবে। তবে মূল কথা হচ্ছে, আমাদেরকে আমাদের পরিবারের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। এতে করে আমাদেরকে আর কষ্টে, অভিমানে ও হীনম্মন্যতায় কাটাতে হবে না। পরিবারের সাথে আন্দোলনের সুসম্পর্ক থাকলে কাজ করতে মজা পাওয়া যায়। প্রাণবন্ত লাগে। মা ছেলেকে বুঝেন, ছেলেও মাকে বুঝেন। পরিবারে তৈরি হয় এক সুন্দর মদিনার সময়ের পরিবারের মতো। রাসূল সা. বলেন, আনসারদের ঘরগুলো উত্তম। আর আনসারদের মধ্যে নাজ্জার গোত্রের ঘরগুলোই উত্তম। মহান আল্লাহ আমাদের পরিবারকে আনসার ও মুহাজিরদের পরিবারের মতো সুন্দর ও তাকওয়াবান পরিবার কায়েম করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : ইসলামী আন্দোলনের কর্মী
আপনার মন্তব্য লিখুন