ইসলামে প্রতিবেশীর হক অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। তাই প্রথমেই জানা দরকার প্রতিবেশীর সংজ্ঞা কী? প্রতিবেশী শুধু ঘরের পাশের প্রতিবেশী বুঝায় না। ইসলামে প্রতিবেশীর সংজ্ঞা বিস্তৃত। প্রতিবেশী হচ্ছে আশপাশে বসবাসকারী মুসলিম-অমুসলিম; আত্মীয়-অনাত্মীয়; নিকটতম-দূরতম সবই অন্তর্ভুক্ত। বাড়ি বা ঘরের প্রতিবেশী, হোস্টেলের প্রতিবেশী, ব্যবসায়ীদের দোকানের প্রতিবেশী, প্রফেশনালদের কর্মজীবনের প্রতিবেশী; যানবাহনে সিটের প্রতিবেশী সবই অন্তর্ভুক্ত।
প্রতিবেশী কারা?
যার ঘর পাশে। হযরত আলীর মতে পাশের ঘর বলতে বুঝায় যে আওয়াজ শুনতে পায়।
একই মসজিদে নামাজ পড়েন যারা তারা প্রতিবেশী।
হযরত আয়েশা রা.-এর মতে ঘরের চার পাশের চল্লিশ ঘরের অধিবাসীরা প্রতিবেশী। ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ এই মতটি গ্রহণ করেছেন।
আল কুরআনে প্রতিবেশীর হক প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন ‘এবং পিতা-মাতার প্রতি ইহসান, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের দাস-দাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর।” (সূরা নিসা : ৩৬)
হাদিসে প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী করিম সা. আমাকে প্রতিবেশীর সম্পর্কে ব্যবহারে এত বেশি তাগিদ করেছেন যে আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাসের অংশীদার বানিয়ে দেওয়া হবে।
আব্দুুল্লাহ ইবন আমর বলেন, রাসূলে করিম সা. বলেছেন যে স্বীয় সাথীর নিকট উত্তম সে আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম সাথী। এবং যে প্রতিবেশীর নিকট উত্তম সে আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম প্রতিবেশী।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলে কারিম সা.কে প্রশ্ন করল আমি ভালো করলাম না খারাপ করলাম এই বিষয়াটি কিভাবে নিশ্চিতভাবে জানতে পারব। আল্লাহর রাসূল সা. বলেন শোন তোমার প্রতিবেশী যদি বলে তুমি ভালো করেছো তাহলে তুমি ভালো করেছো। আর শোন তোমার প্রতিবেশী যখন বলে তুমি খারাপ করেছো তাহলে তুমি খারাপ করেছো।
মুয়ায ইবন জাবাল বলেন সাহাবারা আল্লাহর রাসূলকে জিজ্ঞাসা করলেন একজন প্রতিবেশীর ওপর তার অপর প্রতিবেশীর হক কী? রাসূল সা. বললেন যদি ঋণ চায় ঋণ দিবে সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করবে অসুস্থ হলে দেখতে যাবে। অভাবে পড়লে তা দূর করবে। তার সুখে সুখী হবে। তার দুঃখে দুঃখী হবে। মারা গেলে জানাযায় শরিক হবে। প্রতিবেশীর বাড়ির হাওয়া বাতাস বন্ধ করবে না। ফল কিনলে তার বাড়িতে হাদিয়া দিবে। অন্যথায় লুকিয়ে রাখবে। তোমার ছেলেরা ফল নিয়ে তার ছেলেদের দেখাবে না। যাতে তাদের মনে কষ্ট পায়।
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া জাহান্নামে যাওয়ার কারণ : হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলে কারিম সা.-এর সামনে একজন নারী সম্পর্কে বলা হলো সে খুব নফল নামাজ পড়ে রোজা রাখে এবং দান সাদাকা করে। কিন্তু তার মুখের ভাষা প্রতিবেশীদের কষ্ট দেয়- রাসূলুল্লাহ সা. বললেন সে জাহান্নামি। ঐ ব্যক্তি আরেকজন নারী সম্পর্কে বললেন যার নফল রোজা ও দান সাদাকার ক্ষেত্রে কোনো প্রসিদ্ধি নাই। কখন হয়ত সামান্য পনিরের টুকরা সাদাকা করে তবে সে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। কেউ তার মুখের ভাষায় কষ্ট পায় না। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন সে জান্নাতি (মুসনাদে আহমদ)
প্রতিবেশীর গুরুত্ব
রাসূলে কারিম সা. বলেছেন জিবরিল (আ) প্রতিবেশী সম্পর্কে অব্যাহতভাবে তাগিদ দিয়েছেন। আমি ধারণা করেছিলাম যে প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকার স্বত্ব দেওয়া হবে।
আল্লাহর রাসূল বলেছেন উত্তম প্রতিবেশী আরামদায়ক বাহন এবং প্রশস্ত ঘর সৌভাগ্যের কারণ- আদাবুল মুফরাদ।
অনেক সময় দেখা যায় আত্মীয় স্বজনের আগে প্রতিবেশীই সুখে দুঃখে খোঁজ খবর নিতে পারে। তাই প্রতিবেশীর ভূমিকা অনেক বেশি।
সঠিক প্রতিবেশী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়ে থাকে ঘর কেনার আগে প্রতিবেশী কে তা তালাশ কর।
ফেরাউনের স্ত্রী হযরত আসিয়ার ঘটনায় বড় শিক্ষা রয়েছে। তাকে যখন জুলুম নির্যাতন চালানো হচ্ছিল তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে রাব্বি ইবনি লি ইনদাকা বায়তান ফিল জান্নাতি- হে আমার পালনকর্তা আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করুন (সূরা তাহরিম : ১১) এই দোয়া থেকে আমাদের জন্য শিক্ষা হচ্ছে সঠিক প্রতিবেশী বাছাই করার চেষ্টা করা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা। কারণ প্রতিবেশীর ছেলে সন্তানদের আচরণ আপনার ছেলে সন্তানের উপর পড়বে। ভালো প্রতিবেশী ভালো কাজে উপদেশ দেয়। ভালো ব্যবহার করে। আর প্রতিবেশী খারাপ হলে অনেক দুশ্চিন্তার কারণ হয়।
প্রতিবেশীর হক কয়েক ধরনের
জাবের ইবন আব্দুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে কারিম সা. বলেছেন, প্রতিবেশী সাধারণত তিন ধরনের: ১. যার এক দিক থেকে হক ২. যার দুই দিক থেকে হক ৩. যার তিন দিক থেকে হক। যার এক দিক থেকে হক সে হলো অনাত্মীয় অমুসলিম প্রতিবেশী। এ ব্যক্তির হক শুধু প্রতিবেশীর ভিত্তিতে আত্মীয়ের ভিত্তিতে নয়। আর দ্বিতীয় হক মুসলিম প্রতিবেশী যার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক নাই। আর যার তিন দিক থেকে হক সে হলো মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী। এই ব্যক্তির হক প্রতিবেশী হিসাবে মুসলিম হিসাবে ও আত্মীয় হিসাবে।
প্রতিবেশীর হকের ক্ষেত্রে সবাই সমান নয়। হযরত আয়েশা রা. রাসূলে কারিম সা.কে প্রশ্ন করেন আমার দুজন প্রতিবেশী আছে তাদের কাকে আমি হাদিয়া দিব। রাসূলে কারিম সা. বলেছেন যে তোমার দরজার কাছে তাকে তুমি হাদিয়া দিবে।
প্রতিবেশীর প্রতি করণীয়
ভালো ব্যবহার করা : আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে। যুক্তরাজ্যে এক ফ্ল্যাট বিক্রেতা তার ফ্ল্যাটের মূল্য বেশি বিক্রি করে ভালো মুসলিম প্রতিবেশীর কারণে। আরেকজন ইসলাম কবুল করে মুসলিম প্রতিবেশীর আচরণে মুগ্ধ হয়ে। উক্ত মুসলিম প্রতিবেশী সকাল বেলা নিজের আবর্জনার বিন ফেলার সময় প্রতিবেশীর বিন ডাস্টবিনে ফেলে দিতেন। এতেই উক্ত প্রতিবেশী মুগ্ধ হন।
সুখে দুঃখে খোঁজ খবর নেওয়া : রাসূলে কারিম সা. বলেছেন ঐ ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট ভর্তি করে খায় অথচ সে জানে তার প্রতিবেশী না খেয়ে আছে। এখানে প্রতিবেশী কি মুসলিম না অমুসলিম আত্মীয় কিংবা অনাত্মীয় কিছুই বলা হয়নি।
প্রতিবেশীর সাহায্য করা : আল্লাহর রাসূল বলেন যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করেন। সাহায্যের তিন অবস্থা : ১. ন্যূনতম হচ্ছে প্রতিবেশী/ব্যক্তি সাহায্য চাওয়ার পর করা ২. প্রতিবেশী না চাইলেও করা। তবে নিজের প্রয়োজন পূরণ করে। ৩. নিজের প্রয়োজন থাকার পরও তার চেয়ে প্রতিবেশীর প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয়া। প্রতিবেশী দরিদ্র হলে তার প্রতি হক আরও বেশি।
অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া : আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাবে আসমান থেকে একজন ফেরেশতা আহবান করে বলতে থাকে তুমি সৌভাগ্যবান তোমার হাঁটা কল্যাণকর এবং তুমি জান্নাতে তোমার অবস্থান করে নিলে।
উপহার উপঢৌকন দেওয়া : আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলে কারিম সা. বলেছেন তোমরা হাদিয়া আদান প্রদান কর এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা বাড়বে। আবু হুরাইরা থেকে আরও বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল নারীদেরকে উদ্ধুদ্ধ করেছেন হে মুসলিম নারীগণ তোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশীকে হাদিয়া দিতে সঙ্কোচবোধ না করে। যদিও তা বকরির ক্ষুরের মত একটি নগণ্য বস্তু হয়। আল্লাহর রাসূল সা. আরও বলেন তোমরা হাদিয়া আদান প্রদান কর কেননা তা অন্তরের ক্ষোভকে দূর করে।
খাবারে প্রতিবেশীকে শরিক করা : রাসূলে কারিম সা. বলেন, হে আবু যার তুমি রান্না করলে ঝোল/পানি বাড়িয়ে দাও এবং তোমার প্রতিবেশীকে তাতে শরিক কর। রান্নার ঘ্রাণ প্রতিবেশী পায়। আল্লাহর রাসূল সা. আরও বলেন তোমাদের, খাদেমগণ যখন খানা প্রস্তুত করে নিয়ে আসে তাকে যদি পাশে বসিয়ে খাওয়াতে নাও পার তাকে দু এক লোকমা হলেও দাও। কারণ সেইতো খানা প্রস্তুত করার কষ্ট ও আগুনের তাপ সহ্য করেছে। আল্লাহর রাসূল আরও বলেন যা তুমি নিজে খেলে তা তোমার জন্য সাদাকা। তোমার সন্তানকে খাওয়ালে তা তোমার জন্য সাদাকা। তোমার স্ত্রীকে যা খাওয়ালে তা তোমার জন্য সাদাকা। আর তোমার খাদেমকে যা খাওয়ালে তা তোমার জন্য সাদাকা। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর একদিন একটি ছাগল জবেহ করলেন। তাঁর প্রতিবেশীর মধ্যে একজন ইয়াহুদিও ছিল। তিনি তার বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়াহুদি প্রতিবেশীকে গোশত দেওয়া হয়েছে কিনা?
প্রতিবেশীর সন্তান-পরিবারের ভরণ পোষণের প্রয়োজন এর প্রতি খেয়াল রাখা। ইয়াহুদি ব্যবসায়ী প্রতিবেশীর প্রতি মুসলিম ব্যবসায়ীর আচরণ : একবার এক ইয়াহুদি বাজারে একজন মুসলিম ব্যবসায়ীর কাছে কিছু জিনিস খরিদ করতে চান। উক্ত ব্যবসায়ী খরিদদারকে তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে নিতে বলেন। উক্ত খরিদদার প্রতিবেশী ইয়াহুদির কাছ থেকে মাল কিনে আবার ঐ মুসলিম ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চান তার কাছে মাল থাকার পরও তিনি কেন তা না দিয়ে ইয়াহুদি ব্যবসায়ীর কাছে প্রেরণ করলেন। জবাবে মুসলিম ব্যবসায়ী জানায় তার ছেলে সন্তানের জন্য যতটুকু প্রয়োজন তা তার বিক্রির মুনাফা থেকে হয়েছে। কিন্তু ইয়াহুদি ব্যবসায়ীর তেমন বিক্রি হয়নি। তারও ছেলে সন্তান আছে। তাই সে তার মাল বিক্রি না করে ইয়াহুদির কাছে প্রেরণ করেন। যাতে উক্ত ইয়াহুদিও তার সন্তানদের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।
প্রতিবেশীর মৌলিক প্রয়োজনকে বাধাগ্রস্ত না করা : আবু হুরাইরা রা. বলেন আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন কোন প্রতিবেশী যেন অপর প্রতিবেশীকে তার দেয়ালে কাঠ স্থাপন করতে বাধা না দেয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আদান প্রদান করা : সূরা মাউনে আল্লাহ তায়ালা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস (মাউন) আদান প্রদান যারা করে না তাদেরকে ধিক্কার দিয়েছেন।
প্রতিবেশী মুসলিম হলে আগে সালাম দেওয়া বা সুন্দরভাবে সালামের জবাব দেয়া। অমুসলিম হলে তাকে দেখা হলে সুন্দরভাবে সম্ভাষণ করা। রাসূলে কারিম সা. বলেছেন একজন মুসলমান এর উপর অপর মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে- সালামের জবাব দেয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাযায় অংশগ্রহণ করা দাওয়াত কবুল করা ওয়াদা পূরণ করা এবং হাঁচিদানকারীর জবাব দেওয়া। প্রতিবেশী অমুসলিম হলে তাকে সুন্দরভাবে সম্ভাষণ করা। সালাম শুধু সম্ভাষণ নয়। এটা দোয়া। এটা শান্তির বার্তা।
প্রতিবেশীকে উপদেশ দেয়া ও পরামর্শ চাইলে কল্যাণকর পরামর্শ দেওয়া : রাসূলে কারিম সা. বলেছেন, যিনি মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে না তিনি আমার উম্মত নহে। মুসলিম হলে সালাতের দাওয়াত দেয়া। মসজিদে ডেকে নেয়া।
বাড়ি/ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চাইলে প্রতেবেশীকে আগে জানানো : প্রতিবেশী কিনতে না চাইলে তাহলে অন্যের কাছে বিক্রি না করা। রাসূলে কারিম সা. বলেছেন কেউ যদি তার জমি বিক্রয় করতে চায় সে যেন তার প্রতিবেশীকে জানায় ও তার নিকট প্রস্তাব করে। অন্য হাদিসে আছে এ বিষয়ে প্রতিবেশীর হক সবচেয়ে বেশি।
প্রতিবেশীর নিরাপত্তার প্রতি খেয়াল রাখা : কোনো ধরনের আশঙ্কাজনক কিছু খেয়াল করলে তাকে অবহিত করা।
মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া : রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন মন্দ প্রতিবেশী থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও। অনুমতি না নিয়ে প্রতিবেশীর ঘরে প্রবেশ না করা।
সুন্দর ভাষায় সংশোধন করা : একজন মুমিন অপর মুমিনের জন্য আয়নাস্বরূপ। প্রতিবেশীর ভালো কোনো সংবাদ পেলে তাকে মোবারকবাদ জানানো। তার ছেলে সন্তান ভালো রেজাল্ট করলে খুশি হওয়া। মেসেজ দেওয়া।
প্রতিবেশীর জন্য দোয়া করা : জনৈক ব্যক্তি তাহাজ্জুদের সময় সবসময় প্রতিবেশীর জন্য দোয়া করতেন। নিজের জন্য করতেন না। তার সন্তান তা খেয়াল করে জিজ্ঞাসা করায় উত্তর দিলেন আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন কেউ যদি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করে তাহলে ফেরেশতারা দোয়াকারী বা দোয়াকারিণীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে তার কল্যাণ ও মাগফিরাতের জন্য।
নিজের জন্য যা ভালোবাসি প্রতিবেশীর জন্য তা পছন্দ করা। নিজের জন্য যা অপছন্দ প্রতিবেশীর জন্য তা অপছন্দ করা।
কথাবার্তা ও আচরণে ইসলামের সুমহান আদর্শ ও সৌন্দর্য তুলে ধরা
কথা বলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা : হযরত বেলাল বিন হারেস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ........ মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এমন কথা বলে যার কল্যাণের কথা সে ধারণাই করতে পারেনা অথচ কিয়ামত পর্যন্ত তার দরুন তার সন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করে দেন। আবার মানুষ আল্লাহর অসন্তুষ্টির এমনও কথা বলে যার অকল্যাণের কথা সে ধারণাই করতে পারেনা। অথচ তার দরুন কিয়ামত পর্যন্ত তার অসন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করে দেন (মুয়াত্তা মালেক)
মিষ্টভাষায় কথা বলা: হযরত আলী রা. রাসূলে করিম সা. থেকে বর্ণনা করেন যে আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন নিশ্চয়ই জান্নাতে বলাখানা থাকবে যার ভিতরের সব কিছু বাহির থেকে দেখা যাবে। একজন বেদুঈন দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করল ঐ বালাখানা কাদের জন্য হবে? আল্লাহর রাসূল সা. জবাবে বললেন যারা মিষ্টভাষী হবে; অভাবীদের আহার দেবে ও রাতের গভীরে নামাজ পড়বে। (তিরমিজি) আমাদের সকলের সাথে মিষ্টি ভাষায় কথা বলতে হবে। স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, ছেলে-সন্তান, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী, পরিচিত অপরিচিত, নেতা-কর্মী, শাসক-শাসিত সকলেই পরস্পরের সাথে মিষ্টি ভাষায় কথা বলে আমরা সাদাকার সাওয়াব অর্জন করতে পারি। আবু হুরাইরা রা. বলেন নবী করিম সা. বলেছেন, মানুষের প্রত্যেক সংযোগস্থলের উপর প্রত্যেক দিন সাদাকা ওয়াজিব হয়। তবে দুজনের মধ্যে ইনসাফ করা দরকার। কোনো ব্যক্তিকে তার সওয়ারির উপর উঠিয়ে দেওয়া কিংবা তার মালপত্র তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করা সাদাকা। ভালো কথা বলা সাদাকা। নামাজের জন্য যত কদম চলবে প্রত্যেক কদমে সাদাকা। আর রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়াও সাদাকা- বুখারি।
কথা বলার ক্ষেত্রে ন¤্রতা বজায় রাখা : জিহবা একটি নরম গোস্তের টুকরা। কথা বলার সময় ন¤্রভাবে বলা উচিত। হযরত আয়েশা রা. বলেন একবার একদল ইয়াহুদি আল্লাহর রাসূলের কাছে এসে বলল, আসসামু আলাইকুম অর্থাৎ তোমার মরণ হোক। আয়েশা রা. বললেন তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গজব পড়–ক। তখন নবী করিম সা. বললেন হে আয়েশা একটু থাম। ন¤্রতা অবলম্বন করা তোমাদের কর্তব্য। রুঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন কর। আয়েশা রা. বললেন তারা যা বলেছে আপনি কি তা শোনেননি। তিনি বললেন, আমি যা বললাম তুমি কি তা শোননি। কথাটি তাদের উপরই ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তাদের ব্যাপারে আমার কথা কবুল হবে। আর আমার সম্পর্কে তাদের কথা কবুল হবে না (বুখারি)
সান্ত¡নার বাণী শোনানো : আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে নানা সমস্যায় জর্জরিত। যেমন বর্তমানে কোভিড-১৯ এই বৈশ্বিক মহামারী চলছে। অনেক মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা দরকার। শুধু হতাশা নয় মানুষের মাঝে সান্ত¡নার বাণী ছড়িয়ে দেওয়া নেকির কাজ। রাসূলে করিম সা. বলেছেন যদি কোন ব্যক্তি এমন নারীকে সান্ত¡নার বাক্য বলে যার ছেলে নিখোঁজ হয়ে গেছে বা মারা গেছে তাহলে আল্লাহ তায়ালা ঐ সান্ত¡নাদানকারীকে জান্নাতে মূল্যবান জামাজোড়া পরিধান করাবেন। কোনো ব্যক্তি পথ চিনছেনা আমরা যদি তাকে পথ দেখাতে সাহায্য করি এটাও নেকির কাজ। কোনো ব্যক্তি দুঃখ কষ্টের মাঝে থাকলে তাকে সান্ত¡না দিলে বা তার পেরেশানি দূর করার জন্য পরামর্শ দিলে সাওয়াব মিলে।
সুসংবাদ ও মুবারকবাদ দেয়া মুস্তাহাব : আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদের যারা মনোযোগ সহকারে কথা শোনে এবং যা ভালো তা গ্রহণ করে (সূরা যুমার : ১৭-১৮) কেউ কোনো ভালো কাজ করলে তার জন্য তাকে মুবারকবাদ দেওয়া বা কাউকে কোনো সুসংবাদ পৌঁছানো মুস্তাহাব।
অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া এবং দোয়া করা : হযরত আয়েশা রা. বলেন, নবী করিম সা. নিজের পরিবারের কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তার উপর ডান হাত বুলিয়ে বলতেন, হে আল্লাহ মানুষের প্রভু। রোগ দূরকারী রোগমুক্তি দান কর। তুমিই রোগমুক্তি দানকারী। তোমার রোগমুক্তি ছাড়া কোনো রোগমুক্তি কার্যকর নয় যা কোনো রোগকে ছাড়ে (বুখারি)। সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস রা. বলেন যখন আমি অসুস্থ ছিলাম তখন আল্লাহর রাসূল সা. আমাকে দেখতে আসলেন এবং বললেন হে আল্লাহ সাদকে রোগ মুক্তি দান কর। হে আল্লাহ সাদকে রোগমুক্তি দান কর। হে আল্লাহ সাদকে রোগমুক্তি দান কর (মুসলিম)।
প্রতিবেশীর হক পূরণে বর্জনীয় কাজগুলো
প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে সব সময় সতর্ক থাকা। আল্লাহর রাসূল সা. বলেন কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বাদি/বিবাদি হবে দুই প্রতিবেশী।
প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়া : আবু শুরাই রা. বলেছেন, যে আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন মেহমানের সম্মান করে। যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে। অপর এক হাদিসে আছে, রাসূলে কারিম সা. বলেন আল্লাহর শপথ সেই ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর শপথ সেই ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর শপথ সেই ব্যক্তি মুমিন নয়। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন সেই হতভাগা ব্যক্তি কে? আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। মিকদাদ ইবন আসওয়াদ বলেন, রাসূলে কারিম সা. তার সাহাবাগণকে জেনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তারা বলল তাতো হারাম। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. তা হারাম ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলে কারিম সা. বললেন কোনো ব্যক্তি দশজন নারীর সাথে জেনা করলে যে গুনাহ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে জেনা করা তার চেয়ে বেশি গোনাহ। তারপর আল্লাহর রাসূল সা. তাদেরকে চুরি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। তারা বলল তাতো হারাম। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. তা হারাম ঘোষণা করেছেন। তখন রাসূলে কারিম সা. বললেন কোনো ব্যক্তি দশ বাড়িতে চুরি করা যত বড় অন্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চুরি করা এর চেয়ে বড় অন্যায়।
প্রতিবেশীর পাশে আবর্জনা না ফেলা : ছেলে-মেয়েরা যেন কষ্ট না দেয় সে দিকে খেয়াল রাখা, তার ঘুমের ব্যাঘাত হয় এই ধরনের উচ্চস্বরে কিছু না শোনা। ছুটির দিনে ভোরবেলায় তার রেস্টের প্রতি খেয়াল রাখা।
প্রতিবেশীর কষ্ট সহ্য করা : হাসান বসরী বলেন প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার তাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা নয়। তার কষ্ট সহ্য করাই তার সাথে ভালো ব্যবহার করা। আবু যর রা. বলেন, রাসূলে কারিম সা. বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা তিন ব্যক্তিকে ভালোবাসেন এবং তিন ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি সেই যার একজন মন্দ প্রতিবেশী ছিল যে তাকে সব সময় কষ্ট দিত এবং তার কষ্টের উপর লোকটি ধৈর্য ধরেছিল যত দিন পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তাদের মধ্যে জীবন মৃত্যুর ফায়সালা না করেন। সাহল বিন আব্দুল্লাহ তসতরীর একজন অগ্নি উপাসক প্রতিবেশী ছিল। প্রতিদিন অনেক ময়লা সাহলের ঘরে এসে পড়তো। কিন্তু তিনি প্রতিবেশীর কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। দিনের বেলা আবর্জনা ঢেকে রাখতেন আর রাতে ফেলে দিতেন। সাহলের মৃত্যু ঘনিয়ে এলে তিনি প্রতিবেশীকে ডেকে আবর্জনার স্তূপ দেখিয়ে বললেন আমার মৃত্যু ঘনিয়ে না এলে আমি এটা আপনাকে দেখাতাম না। কারণ আমার আশঙ্কা আমার মরণের পর আমার পরিবারের কেউ আমার মতো সহনশীলতা দেখাবে না। তাই আপনাকে দেখালাম। প্রতিবেশী সাহলের দীর্ঘদিনের ধৈর্য ও সহনশীলতায় মুগ্ধ হয়ে ইসলাম কবুল করেন।
দোষ চর্চা না করা : একদিন হযরত আয়েশা রা. নিজের কথা বর্ণনা করেন যে আমি একবার নবী করিম সা.-এর কাছে সাফিয়্যা সম্পর্কে বললাম সাফিয়্যা তো এই (অর্থাৎ বেঁটে)। এই কথা শুনে নবীজি সা. বললেন তুমি এমন কথা বলেছো যদি তা সাগরের পানিতে মিশিয়ে দেয়া হয় তাহলে সাগরের পানি ঘোলা হয়ে যাবে। (সুনানে আবু দাউদ) কারো দোষ বর্ণনার পরিবর্তে তা ঢেকে রাখা নেকির কাজ। আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন যে বান্দাহ অন্য বান্দার দোষত্রুটি ইহজীবনে গোপন রাখবে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন। (মুসলিম)
তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও মন্দ নামে না ডাকা : হাসি তামাশার স্থলে বা ইচ্ছা করে কাউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা বা মন্দ নামে ডাকতে দেখা যায়। কিন্তু এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে কেননা যাকে উপহাস করা হচ্ছে সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। কোনো নারী অপর কোনো নারীকে যেন উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম অতি মন্দ। যারা এসব থেকে বিরত না হবে তারা জালেম। (সূরা হুজুরাত : ১১) মাওলানা তাকী উসমানী তাফসিরে তাওযিহুল কুরআনে উল্লেখ করেন যে, কাউকে খারাপ নাম দিয়ে দিলে তা তার জন্য পীড়াদায়ক হয়। কাউকে অপমান করা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। রাসূলে কারিম সা. বলেন, তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। একে অপরের প্রতি জুলুম করো না এবং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করো না। (মুসলিম)
বিতর্ক পরিহার করা : হযরত আবু উমামা বাহেলি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে কারিম সা. বলেছেন, আমি ঐ ব্যক্তির জন্য জান্নাতের কিনারায় একটি ঘরের দায়িত্ব গ্রহণ করব যে সত্য ও সঠিক হবার পরও বিতর্ক ছেড়ে দেয়। আর ঐ ব্যক্তির জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে কোন গৃহের জামিন হব যে ঠাট্টাচ্ছলেও মিথ্যা পরিহার করে। আর যে ব্যক্তির চরিত্র সুন্দর হবে তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে একটি ঘরের দায়িত্ব গ্রহণ করব। (আবু দাউদ)
হাসি তামাশা ও ঠাট্টা না করা : কাউকে নিয়ে হাসি-তামাশা করা শোভনীয় নয়। কিন্তু হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, সাহাবায়ে কেরাম রাসূলে কারিম সা.কে একবার বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ আপনিও আমাদের সাথে হাসি-তামাশা করেন। তখন নবীজি বলেন, হ্যাঁ আমি হাসি-তামাশা করি তবে আমি সত্য ছাড়া বলি না (তিরমিজি) এই হাদিস থেকে বুঝা যায় সত্য কথা শরিয়তের সীমার মাঝে আনন্দদায়কভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে। তবে এটা মাঝে মধ্যে করা যায়। সব সময় হাসি তামাশায় মত্ত থাকা ঠিক নয়।
কথায় কষ্ট না দেওয়া : হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলে কারিম সা.-এর সামনে একজন নারী সম্পর্কে বলা হলো সে খুব নফল নামাজ পড়ে রোজা রাখে এবং দান সাদাকা করে। কিন্তু তার মুখের ভাষা প্রতিবেশীদের কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন সে জাহান্নামি। ঐ ব্যক্তি আরেকজন নারী সম্পর্কে বললেন যার নফল রোজা ও দান সাদাকার ক্ষেত্রে কোনো প্রসিদ্ধি নাই। কখনো হয়ত সামান্য পনিরের টুকরা সাদাকা করে তবে সে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। কেউ তার মুখের ভাষায় কষ্ট পায় না। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন সে জান্নাতি। (মুসনাদে আহমদ)
অভিশাপ ও বদদোয়া না দেওয়া : হযরত সামুরা ইবনে জুন্দব রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন তোমরা একে অপরকে আল্লাহর অভিসম্পাত, তাঁর গজব ও জাহান্নামের বদদোয়া করো না। (মুসনাদে আহমদ)
গোপন কথা ফাঁস, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ না করা : কারো গোপন কথা ফাঁস করা বড় ধরনের অপরাধ। অর্থ-সম্পদ যেমনিভাবে আমানত অনুরূপভাবে গোপন কথাবার্তাও আমানত। আমরা অনেক সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই যে গোপন কথা ফাঁস করব না কিন্তু কারো সাথে ঝগড়া হলে অথবা মুখ ফসকে অহরহ গোপন কথা ফাঁস করতে দেখা যায়। আবার বলা হয় এটা অত্যন্ত গোপন। শুধু আপনাকেই বলছি। আপনি আর কাউকে বলবেন না।
লেখক : কলামিস্ট ও ইসলামী চিন্তাবিদ
আপনার মন্তব্য লিখুন